রাসেল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে লালমনিরহাটে শান্তি সমাবেশ ও পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় দলের অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ সংঘটিত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও বর্তমানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উভয় দলের মধ্যে এসব ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নেতারা জানান, আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। হঠাৎ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। বিএনপির হামলায় আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লবসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। বর্তমানে আহত আওয়ামীলীগ নেতা বিপ্লব চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মহেন্দ্রনগরের বুড়ীর বাজার থেকে পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী একটি পদযাত্রা বের করে বিএনপি। এসময় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাই পুলিশের উপস্থিতে পদযাত্রায় হামলা করলে পদযাত্রাটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় বিএনপি পার্টি অফিস, কয়েকটি দোকানপাট ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ মন্ডল বলেন, বিএনপির পদযাত্রায় হামলা ও ভাংচুর করেছে আওয়ামীলীগের নেতাকমীরা। আওয়ামীলীগের এ হামলায় বিএনপির অন্তত ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বুড়ির বাজারের পাট ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা জানান, বিএনপির লোকজন আমার পাটের গোডাউনসহ কয়েকটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসলেও ততক্ষণে গোডাউনে থাকা পাট পুড়ে যায়।
জাতীয় শ্রমিক লীগ মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি রকিব মিয়া জানান, বিএনপির লোকজন আমার বাড়ি ভাঙচুর করে দুটি গাভী গরু ও দুটি বাছুর চুরি করে নিয়ে গেছে।
জেলা সদরের মহেন্দ্রনগর ছাড়াও জেলার বেশ কিছু এলাকায় উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় আহত নেতাকর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে পাল্টা পাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন।
দুই দলের এ সংঘর্ষের বিষয়ে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ সংঘটিত হওয়া ঐসব এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে মনে করেছেন স্থানীয়রা। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
Leave a Reply