রাসেল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগরের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে জেলা পিএনপি'র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছেে
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড়স্থ লালমনিরহাট পৌর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লালমনিরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন প্রমুখ। এ সময় লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম রফিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মজমুল হক প্রামানিক, লালমনিরহাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সালামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গত ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ শনিবার লালমনিরহাট সদর উপজেলার সকল ইউনিয়নে গণ পদযাত্রা কর্মসূচী পালিত হয়। মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে কর্মসূচী পালন করার প্রস্তুতি গ্রহণের প্রাক্কালে শান্তি সমাবেশের নাম করে আওয়ামী লীগ পুলিশের নাকের ডগায় বিএনপি’র কর্মসূচীতে বর্বরোচিত হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে সে দিনের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ-এর শান্তি সমাবেশ হারাটি বন্দরে মঞ্চ করে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, অথচ বুড়ির বাজারে সশস্ত্র মিছিল নিয়ে আশা ছিল তাদের পূর্ব পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তাদের কর্মসূচি ছিল শান্তি সমাবেশের, কিন্তু তারা সমাবেশ না করে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য শান্তি প্রিয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর সশস্ত্র আক্রমন চালায়। এই সশস্ত্র মিছিলে যোগ দেয় লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় শতাধিক মটর সাইকেলে লালমনিরহাটের আলোচিত একটি সন্ত্রাসী গ্রুপও যোগ দেয়।
পুলিশ সুপার এবং পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি অফিস ভাংচুর এবং ব্যাপক লুটতরাজ করে, যা ভিডিও ফুটেজে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়। ঘটনাস্থলে অবস্থিত পুলিশ বাহীনির সদস্যরা নীরব ভূমিকা পালন করে। এর পরবর্তীতে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল-এর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (রামদা, বেকি, ক্রিচ) নিয়ে মারাত্মকভাবে ভাংচুর করে এবং ব্যাপক লুটপাট করে। এছাড়াও তার বাড়িতে অবস্থিত ১২/১৩ টি মটর সাইকেল ভাংচুর করে যার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
মজিদ মন্ডলের বাড়ী ভাংচুরের পর ফেরার পথে হোসেন মেকার, শহিদুল কাজী, মজিদুল, রহিম ও মোশারফকে চরম ভাবে মারপিট করে এবং দোকানপাট লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কয়েকটি মামলা হয়, তার একটি মামলার বাদী রাকিব হাসান। সে তার দাখিলকৃত মামলার যে গরু চুরির কথা বলেছে, সেই গরু তারই শশুর মোফাজ্জলের বাড়ী কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের প্রভাব মৌজা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে, যা এখন লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। (অডিও ক্লিপ রয়েছে)।
অপর আর একটি মামলার বাদী লালমনিরহাট সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল। বুড়ির বাজারে তার কোনো দোকান নেই। অথচ সে এজাহারে দোকানপাট লুট ও অগ্নিসংযোগের কথা বলে। কোনো দোকানদার এ ব্যাপারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে কোনো অভিযোগ করে নাই। এতেই প্রমাণিত হয় অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।
আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, কথিত একটি জুট মিলে গত কয়েকদিন ধরে এই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা তৈরী করা হয়।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা একাধিক নেতা ও ভোট চোরের এমপি বিএনপি’র লোকজনকে দেখা মাত্র শেষ করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এ থেকে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এ ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে এটা প্রমানিত হয় যে, বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ গণ পদযাত্রা কর্মসূচীকে বিতর্কিত করার জন্য আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এর পরিপেক্ষিতে ইতোমধ্যে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে পুলিশ ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে নিরীহ জনসাধারণকে গ্রেপ্তার করছে।
আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারগণের প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি।
পরে ল্যাপটপের স্কিনে ওই দিনের ঘটনার ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করেন বিএনপি'র নেতারা।