শাকিল আহমেদ,নড়াইলঃ
নড়াইলের লোহাগড়ায় দ্বিতীয় বউ চলে যাওয়ায় আমগাছের সঙ্গে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে ৮ মাসের শিশু আল-হাবিবকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টা করেছে তার জন্মদাতা বাবা মামুন শেখ (৩৬)। এ ঘটনায় জড়িত ওই শিশুর বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামুন শেখ লোহাগড়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৩ বছর আগে ইসলামি শরিয়াত মোতাবেক লোহাগড়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে মামুন শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় কুলসুম বেগমের (৩০)। বিয়ের পর থেকে তারা সংসার করে আসছিলেন। সংসার করাকালীন তাদের ঘরে দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। এক বছর আগে মামুন শেখ প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রীর কোনো খোঁজ খবর নেন না এবং ছেলে মেয়েদের খাওয়া পরা সংসারিক কোনো খরচ দেন না। এছাড়া প্রায়ই যৌতুকের জন্য কুলসুম বেগমকে মারপিট ও নির্যাতন করতে থাকেন মামুন শেখ।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে স্বামী মামুন শেখ, কুলসুম বেগমকে তার বাবার বাড়ি হতে ১ লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলেন। কিন্তু বাবা-মা গরীব লোক বিধায় টাকা আনতে অস্বীকার করেন কুলসুম। পরে তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন মামুন। এতে তার হাতে পায়ে, পিঠে, মাথায় জখম হয়। এরপর গলা চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করেন মামুন শেখ। এ সময় মামুন শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী মাফুজা আক্তার সাথী (২৫) চুলের মুঠি ধরে কুলসুমকে কিল ঘুষি মেরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর দ্বিতীয় বউ চলে যাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে মামুন শেখ দুধের শিশু বাচ্চা আল হাবিবকে (৮ মাস) ধরে নিয়ে আম গাছের ডালে পা ওপর দিকে করে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে মারধর করে ও শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। কুলসুম বেগম ও তার শাশুড়ি মামুনের হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করতে গেলে তাদের ও মারপিট করে।
এসময় তার শাশুড়ি আসমা বেগম কুলসুমকে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেয়।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় শিশুর মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামি মামুন শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্য আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply