রাসেল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
প্রতিবেশীর উপর হামলা করে মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে চাকুরীতে হাজিরা দিলেও লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান ও দুইজন শিক্ষক।
স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের ইশোরকোল গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধিনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত রয়েছেন। আর শিক্ষকরা হলেন, কাকিনাহাট মোস্তাফিয়া কামিল মাদরাসার এবতেদায়ী প্রধান নজরুল মুন্সি ও বিএসসি শিক্ষক আশরাফুল মিয়া।
পুলিশ ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী মৃত আজিতুল্ল্যার ছেলে উজির মামুদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমানের। তার জের ধরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় স্থানীয় মোখলেছুর রহমানের দোকানের পাশে উজির মামুদকে একা পেয়ে দলবল নিয়ে মারপিট শুরু করেন জিয়াউর রহমান। খবর পেয়ে তাকে বাঁচাতে উজির মামুদের চাচা আফজাল, চাচি সবজা বেগম, ভাই শাহাজাহান, ভাগ্নি জ্যোতি বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে জিয়াউর রহমান ও তার লোকজন। এতে উজির মামুদসহ তার পরিবারের ৭/৮জন গুরুতর আহত হন।
তাদের আত্নচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহত উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় উজির মামুদ বাদি হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান, শিক্ষক নজরুর মুন্সি ও আশরাফুলসহ ১৮জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় মোখলেছুর ও রিয়াদ নামে দুইজনকে গ্রেফতারও করে থানা পুলিশ।
সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধে মামলা হলে তার তদারকি কর্মকর্তাকে নথি পাঠিয়ে অবগত করে বরখাস্ত করার নিয়ম থাকলেও থানা পুলিশ অদৃশ্য কারনে তা করেননি। ফলে স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান, শিক্ষক নজরুল মুন্সি ও আশরাফুল পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও সরকারী চাকুরীর খাতায় নিয়মিত উপস্থিত থেকে হাজিরা দিচ্ছেন।
মামলাটির বাদি উজির মাহমুদ বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমান টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে জামিন না নিয়েও চাকুরী করছে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। উল্টো আমাদেরকে হাসপাতালে মারপিট করার ও ভর্তি বাতিল করার হুমকী দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে মেরে ফেলার হুমকীও দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারী।
কাকিনাহাট মোস্তাফিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সায়েদার রহমান বলেন, মামলা হলেও তারা নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন প্রতিষ্ঠানে। মামলার নথি আমাকে পাঠানো হয়নি। নথি পেলে বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় কুমার বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি কর্মস্থলেই রয়েছেন। খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, অভিযুক্তরা সরকারী চাকুরী করে তা জানা ছিল না। এখন স্ব স্ব কর্মস্থলে মামলার নথি পাঠানো হবে। একই সাথে তাদের গ্রেফতারে চেষ্টাও করা হচ্ছে।
Leave a Reply