নিউজ ডেস্ক :
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। নিজের স্ত্রীকে জবাই করে ঠাণ্ডা মাথায় শবে বরাতের নামাজ আদায় করেছেন পাষণ্ড স্বামী। নামাজ শেষে বাসায় ফিরে স্ত্রীর জবাই করা মরদেহ নিয়ে চিৎকারও করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের গুডুম্বা পূর্বপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ পান্না বেগম জেলার আক্কেলপুর উপজেলার গুডুম্বা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বামী, ভাসুর, জাসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ৭ মার্চ মঙ্গলবার রাতে স্বামী সিরাজুল শবে বরাতের নামাজ আদায়ের জন্য গ্রামের মসজিদে যান। রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরে স্ত্রীর জবাই করা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ঘরের মেঝেতে গলাকাটা লাশ ও ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর স্বামীর নাটক আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বেরিয়ে আসে স্ত্রীকে হত্যার রহস্য। উদ্ধার করা হয় স্বামীর ব্যবহৃত রক্তমাখা জামাকাপড় ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরি।
গুডুম্বা গ্রামের বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, সিরাজুল ইসলাম শবে বরাতের মিলাদ করতে গ্রামের মসজিদে গিয়েছিলেন। তিনি রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে ঘরের ভেতর তার স্ত্রীর জবাই করা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। গ্রামবাসীরা ছুটে এসে ঘরের ভেতর সিরাজুলের স্ত্রীর জবাই করা লাশ দেখতে পান। তারা থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে নিহতের স্বামী, ভাসুর ও জাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আর হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, মানুষ কিভাবে এমন নাটক করতে পারে। নিজের স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার পর ঠাণ্ডা মাথায় নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরেন- এমন অভিনয় করে। এ ঘটনায় আমরা হতবাক। এ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে বিচার দাবি তার।
আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের মেঝেতে গৃহবধূর শরীরের কাপড় ও ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখি। তার জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহ হয়। পরে তাকে অধিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে। সেখান থেকে স্বামী সিরাজুল ইসলাম ও তার ভাই, ভাবি ও প্রতিবেশী একজনকে আটক করা হয়েছে।