রাসেল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোড়াগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জুলফিকার আলী ভুট্টুর বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সহকারী শিক্ষক জুলফিকার আলী ভুট্টুর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিদ্যালয়ের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলা সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোরাগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জুলফিকার আলী ভুট্টু যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২ মার্চ যৌন হয়রানির বিষয়টি অবিভাবক মহলে প্রকাশ পায়। সহকারী শিক্ষক জুলফিকার আলী ভুট্টু বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের ডেকে স্পর্শ কাতর স্হানে হাত দেয় ও খারাপ ভাষা ব্যবহার করে। বিষয়টি অবিভাবকের মাঝে প্রকাশ পাওয়ার পর ওই এলাকায় চলছে আলোচনার সমালোচনার ঝর।
ওই স্কুলের ৩য়-৪র্থ শ্রেণির কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলে আসা জুলফিকার আলী ভুট্টু স্যার আমাদের সাথে প্রতিদিন খুব খারাপ আচরণ করেন। ক্লাসে এসে গাল ধরে টানাটানি করেন এবং প্রায় সময় স্পর্শ কাতর স্হানে হাত দেন। বাজে কথা বলে আবার বাড়িতে বললে পরের দিন স্কুলে গেলে মারে। আমরা স্কুলের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি ছাত্রী মিলে গণ স্বাক্ষর করে হেড স্যারকে অভিযোগ দিয়েছি। ওই বদমাইশ শিক্ষকের বিচার চাই।
৫ম শ্রেণির কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী জানায়, আমরা স্কুলে এসে জুলফিকার আলী ভুট্টু স্যারের ভয়ে ভয়ে থাকি। কখন ডাকে, ডাকলে ওনার কাছে যেতে হয়। না গেলে বেতের মাইর খেতে হয়। ওনার কাছে গেলে গায়ে হাত দেয় আর খারাপ খারাপ কথা বলে। বাড়িতে বললে আবার মারে। তাই আমরা সব সময় ভয়ে ভয়ে স্কুলে থাকি। আমরা এমন নোংরা শিক্ষকের বিচার দাবি করছি।
ওই স্কুলের কয়েক'জন শিক্ষার্থী'র অবিভাবক জানায়, স্কুলের শিক্ষক মানে বাচ্চাদের অবিভাবক। তাদের কাছে বাচ্চারা পড়তে ও মানুষ হতে যায়। যার কারনে তাদেরকে মানুষ তৈরির কারিগর বলা হয়। তারা যদি বাচ্চাদের ভদ্রতা শিষ্টতা না শিক্ষিয়ে খারাপ আচরণ করে তাহলে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। আমরা অবিভাবকগণ ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক হোসেন আলী বলেন, বাচ্চারা আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে আমি আমার উপরন্তু কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাগণ তদন্ত করছেন।
অভিযুক্ত জুলফিকার আলী ভুট্টু-কে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার আবিদা সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছি। জুলফিকার আলী ভুট্টুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, আমি কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।