নিজস্ব প্রতিবেদক।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সমন্বিত জোয়ারা মডেল ইউপি কার্যালয় স্থাপনে স্বার্থান্বেষী হাতে জিম্মি ও দুর্বৃত্তরাই বড়বাধা ও নানা প্রতিবন্ধীকতার কারণ। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নাম সম্বলিত ভিত্তিপ্রস্তর ভাঙন এবং অনুষ্ঠানস্থল তছনছ করে ফেলে সশস্ত্র দূর্বৃত্তরা। ঐতিহ্যবাহী ২নং জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বিত কার্যালয় শুধু স্বার্থান্বেষী মহলের দূর্বৃত্তয়ানের জন্য বাস্তবায়িত হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়,প্রায় ৭০বছর পূর্বে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান প্রথিতযশা আইনজীবী মরহুম এডভোকেট বদিউল আলমের নিজস্ব জমির উপর আনুষ্ঠানিক বর্তমান ইউপি কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। এই ইউনিয়নের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং জনকল্যাণের কথা চিন্তা করে তার পরিবারের পক্ষে পরিচালিত ট্রাস্ট নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জন্য ২৪ শতক জমি দান করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০১৬ সালের ১২ফ্রেব্রুয়ারী স্থানীয় প্রশাসন তৎকালিন ইউপি চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন ফকির একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যাতে সেই সময়কার জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন নিজে উপস্থিত হয়ে জমির দলিল আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করার কথা থাকলেও তার একদিন পুর্বে জেলা প্রশাসকের নাম সম্বলিত ভিত্তিপ্রস্তর ভাঙন এবং অনুষ্ঠানস্থল তছনছ করে ফেলে সশস্ত্র দূর্বৃত্তরা।
জোয়ারা ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা যায়,ইউপি কার্যালয় জরাজীর্ন হয়ে পড়ে আছে,সেখানে ভিতরে-বাইরে গবাদি পশুর অবাধ বিচরণ।কার্যালয়ের এমন অবস্থায়
সাবেক ইউপি মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,কার্যালয়ের এমন বেহাল দশা কোন ভাবেই কাম্য নয়।অত্র কার্যালয়ে আগের অনেক চেয়ারম্যান সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমান চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারীতা,ক্ষমতার দম্ভ,নিজ ব্যক্তিগত স্বার্থে জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের এই দূরাবস্থা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচিত হবার পর চেয়ারম্যান রোকন পরিষদ কার্যালয়ে না বসে বেআইনি ভাবে, তার নিজস্ব অফিসকে ইউনিয়ন কাউন্সিলের অফিসে পরিণত করেছে।সাধারণ মানুষ ঐ অফিসে গিয়ে তেমন একটা সেবা পায়না,চেয়ারম্যানের দালালদের নিকট সব কিছু জিম্মি।
এলাকাবাসীর দাবি,স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইউনিয়ন পরিষদকে ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী,কার্যকর উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত করেছে। যেখানে একজন সচিব সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছেন ইউনিয়নবাসীকে। কিন্তু চন্দনাইশের ২নং জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে সময়ের উল্টোপথে। চেয়ারম্যানের খামখেয়ালিপনা,স্বেচ্ছাচারীতা, ক্ষমতার অপব্যবহারে চন্দনাইশের ২নং ঐতিহ্যবাহী জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় এখানে মডেল ইউনিয়ন পরিষদ হওয়ার কথা,আধুনিক দৃষ্টিনন্দন বিল্ডিং থাকার কথা,সেখানে ইউনিয়ন পরিষদে কার্যালয় গোয়াল ঘরে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসী পাচ্ছেনা কাংখিত সেবা।চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী রোকন নির্বাচিত হওয়ার পর ৯/১০ বার শুধু কার্যালয়ে ঘুরে ফিরে চলে গেছেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে,মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায় নি।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত অনেক মনিষীর জন্মস্থান চন্দনাইশের এই জোয়ারা ইউনিয়ন। প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানি প্রফেসর ডাক্তার নুরুল ইসলাম,সাবেক রাষ্ট্রদূত কে এম সেহাবুদ্দিন, প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ও এই ইউনিয়নের কিংবদন্তি সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট বদিউল আলম,বাংলাদেশ কর কমিশনের কর কমিশনার ইকবালুর রহমান,বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক চেয়ারম্যান ও পটিয়া সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি চৌধুরী সিরাজুল ইসলাম খালেদ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য প্রফেসর আবদুল ওয়াদদু প্রমুখের স্মৃতি বিজরিত ইউনিয়ন পরিষদ জোয়ারা; শুধুমাত্র চেয়ারম্যানের চরম দায়িত্বহীনতার জন্য অপরাধ ও অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে।
Leave a Reply