রাজশাহী,প্রতিনিধি :
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ৬ কেজি ৭০০ গ্রাম হেরোইনসহ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আশিককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫।
শনিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সারাংপুর জামাতির মোড় এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে।
রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল রিয়াজ শাহরিয়ার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি মাদক চোরাচালান চক্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পদ্মার চর সংলগ্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধ মাদকদ্রব্য চোরাচালান করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে রাজধানীসহ দেশের সকল প্রান্তে মাদক সরবরাহ করে আসছিল। এরা বিভিন্ন সময় সীমান্তবর্তী এলাকা হতে হেরোইন সংগ্রহ করে খুব কম সময়ের মধ্যে তা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস, ট্রেন, ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহণের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় পাচার করে।
মাদকের চোরাচালান রোধে র্যাব-৫ গোয়েন্দা নজরদারি পরিচালনা করে আসছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদক চোরাচালান চক্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য র্যাব -৫ এর গোয়েন্দা দল তাদের এ বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে।
গোয়েন্দাদল এটাও সনাক্ত করতে সক্ষম হয় যে, পাচারের পূর্বে চক্রটির সদস্য আশিক ও তার পিতা সাইফুল পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক রাতে কিছু সময়ের জন্য তা মজুদ করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্যান্য মাদক কারবারীর মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৫ এর জানতে পারে শনিবার দিবাগর রাতে এই চক্রের একটি বড় চালান পাচার হবে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে দুর্গম চর এলাকায় তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে র্যাবের অপারেশন দল দীর্ঘ ৮-৯ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু চক্রটি এরই মধ্যে চালানটি ভিন্ন পথে নদী পার করে আশিকের বাড়ীতে নিয়ে আসে।
পরবর্তীতে অপারেশন দল আবার নদী পার হয়ে রাত প্রায় সাড়ে ১২ টার দিকে মাদকব্যবসায়ী আশিকের বাড়ী ঘেরাও করে।
র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আশিকের পিতা সাইফুল পালাতে সক্ষম হলেও আশিক পালাবার সময় হাতে নাতে র্যাবের হতে ধরা পড়ে।
পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের হেরোইন মজুদের কথা স্বীকার করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার রান্নাঘরের ভিতর চুলার পিছনে মাটিতে পোতা অবস্থায় এবং মাছ ধরার জালের ভিতর অভিনব কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৬কেজি ৭০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়, আশিক এবং তার পিতা সাইফুল ইসলাম সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের সাথে জড়িত। এই চক্রটির সদস্যরা এলাকায় কৃষিকাজ, ট্রলি চালানোসহ বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশের আড়ালে সীমান্তের ওপার হতে হেরোইন চোরাচালান করে থাকে। এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা এ পন্থায় বিপুল পরিমান মাদক সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করে।
তাদের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে র্যাব জানায়।
Leave a Reply