আবু সাইদ ( বিশেষ প্রতিনিধি)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননার দায়ে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর শহীদ নুরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তরিত কুমার কুন্ডু ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুব রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কাশিনাথপুরের আওয়ামীলীগ নেতা এমএনএইচ জাকির বাদী হয়ে ৫০০/৫০১/৫০৩/৫০৬ (২) দণ্ডবিধি অনুযায়ী বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী-৫ আাদালতে মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নম্বর ২৬/২০২৩ (সাঁথিয়া)।
জানা যায়, ওই কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত "উচ্ছ্বসিত সূবর্ণ" নামের ম্যাগাজিনের কভার পৃষ্ঠায় স্থানীয় এক জামায়াত নেতার বড় ছবিসহ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। এরপরের পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ৩য় পাতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে শ্রদ্ধায় স্মরণ জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবির পূর্বে বৃহত্তর কাশিনাথপুর সাংগঠনিক থানা জামায়াতের আমীর মোস্তাফিজুর রহমান ফিরোজের বড় করে ছবি ছাপা হওয়ায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ৩ ও ৪ মার্চ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ম্যাগাজিনটির। এরপর থেকেই এ নিয়ে তোলপাড় হয় এবং ১৯ মার্চ (রোববার) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তরিত কুমার কুন্ডু ও ওই ম্যাগাজিনের সম্পাদনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মাহবুব রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে ওই কলেজের একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, ম্যাগাজিন প্রকাশের প্রধান দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব রহমান নামের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। ম্যাগাজিনটি প্রকাশের পূর্বে শিক্ষকদের সাথে কোন আলোচনাই তিনি করেননি বলে তারা অভিযোগ করেন। ওই কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী সিরাজুল ইসলাম বকুল বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে যারা সম্পৃক্ত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবী।
এ বিষয়ে কলেজের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক এমএম শাহাবুদ্দিন টুটুল মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, এতোবড় ভুল মেনে নেওয়া যায় না। ম্যাগাজিনে কিভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবির পূর্বে একজন জামায়াত নেতার ছবিসহ বিজ্ঞাপন ছাপা হলো?
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তরিত কুমার কুন্ডুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। কলেজ গভর্নিং বডির হিতৈষী সদস্য মজিবর রহমান মুকুল বলেন, বিজ্ঞাপনের অধ্যায়েই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেয়া হয়েছে। তাহলে বঙ্গবন্ধুর ছবি কি বিজ্ঞাপনের অন্তর্ভুক্ত? এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদ হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। আমি দেখেছি অনেক পরে। ম্যাগাজিন ছাপানোর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে ম্যাগাজিনের বিষয়ে কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি। এবিষয়ে আমি খুবই মর্মাহত। কোন অবস্থাতেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এটা আশা করিনি। পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার এ্যাড. শামসুল হক টুকুর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমিও দেখেছি। এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এঘটনার জন্য অবশ্যই কলেজ কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে হবে।