শাকিল আহমেদ,নড়াইলঃ
নড়াইলে মসজিদের টাকার হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই গ্রামের উভয় পক্ষের অন্তত ৬ জন আহত হন। পরে
সংঘর্ষে জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার বোড়ামারা গ্রামের মৃত আবুল সিকদারের ছেলে ও
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আমিনুর সিকদার, আলোকদিয়া গ্রামের মৃত নিছার
উদ্দিন মোল্যার ছেলে ও মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু দাউদ মোল্যা, ইউনুচ
মোল্যার ছেলে লিয়াকত মোল্যা ও আবুজার মোল্যার ছেলে মাবিবর হোসেন।
শনিবার (১ এপ্রিল) তারাবির নামাজের পর রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার
আলোকদিয়া গ্রামের আলোকদিয়া ঈদগাহ জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা
ঘটে।
আহতরা হলেন-মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু দাউদ মোল্যা সমর্থিত সদর উপজেলার
শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (৩২), ছিরু মোল্যা
(৪৫) ও রিয়াদ মোল্যা (১৫) এবং মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আমিনুর সিকদার
সমর্থিত ওই উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রামের শরিফুল সিকদার
(৩০), তরিকুল মোল্যা (৩২) ও ভুট্টো সিকদার (৫০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইল সদরের শাহাবাদ ও মাইজপাড়া
ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রামের স্থানীয় মুসল্লিরা আলোকদিয়া ঈদগাহ
জামে মসজিদে নামাজ পড়েন। মসজিদ কমিটির অনুমতি ব্যতিত কোষাধ্যক্ষ আমিনুর
সিকদার মসজিদের দুটি পুরাতন সিলিং ফ্যান চার থেকে পাঁচ দিন আগে ২ হাজার
৮০০ টাকায় বিক্রি করেন।
শনিবার (১ এপ্রিল) রাতে তারাবির নামায শেষে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু দাউদ
মোল্যা, কমিটির অনুমতি ব্যতিত কার নির্দেশে কেন সিলিং ফ্যান বিক্রি করা
হয়েছে কোষাধ্যক্ষ আমিনুরের কাছে জানতে চান এবং সেই টাকার হিসাব দিতে
বলেন।
প্রতি উত্তরে আমিনুর তেমন কোনো সন্তুষ্টজনক উত্তর দিতে না পারায়
সভাপতির সাথে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে মসজিদের সামনের রাস্তায় মসজিদ কমিটির সভাপতি সমর্থিত শাহাবাদ
ইউনিয়নের আলোকদিয়া ও কোষাধ্যক্ষ সমর্থিত মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা দুই
গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান এবং ঘটনার সাথে জড়িত
চার জনকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখেন।
নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজওয়ানুল হক
বলেন, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের
মধ্যে আবু দাউদ মোল্যার ছেলে সাদ্দাম হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায়
উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, খবর
পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশের একাধিক টিমসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। গ্রামবাসীদের
ঠেকিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে আটক
করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও সংঘাত
এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক
রয়েছে।
Leave a Reply