এস আর,সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
রাজশাহীতে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। রোজার এক সপ্তাহ পরে এখন মানুষ ভীড় জমাচ্ছেন বাজারে-শপিংমলে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীর ফুটপাত থেকে অভিজাত শপিংমলে জমে উঠতে শুরু করেছে ঈদের কেনাকাটা। তবে পোশাকের দামে এবার হোচট খাচ্ছেন ক্রেতারা।
এরইমধ্যে ঈদের বাহারী পোশাকে ভরেছে দোকানপাট ও শপিংমলগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত তিন বছর ব্যবসা তেমন হয়নি। তাই এ বছর সব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম অনেব বেশি বলে জানান ক্রেতারা। ক্রেতারা বলছেন. নিত্য বাজারের যেমন দাম বেড়েছে সব পন্যের, পোশাকের দামও বেড়েছে তেমন ভাবেই।
রবিবার রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট ও হর্কাস মার্কেট, গণকপাড়াসহ বেশ কয়েকটি মার্কেট ও শপিং মলে ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভীড়। সবচেয়ে এখন বেশি ভিড় সাহেব বাজারের আরডিএ মার্কেটে। এই বাজারে মেয়েদের শাড়ি, থ্রি-পিস, বোরকা, জুতা-স্যান্ডেল, অলংকার, কসমেটিকস থেকে শুরু করে সবকিছুই সহজলভ্য হওয়ায় নারী ক্রেতার সমাগম বেশি।
ছেলেদের নিত্যনতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিন্স, টি-শার্ট এবং থান কাপড়ের দোকান থাকায় এই মার্কেটে ছেলেদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। ভিড় আছে নগরীর হকার্স মার্কেটেও। এছাড়া সিট কাপড়ের দোকানেও বেশী ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী আবিদ হাসান জানান, এবার রোজার শুরু থেকেই বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে।
নারী ও শিশুদের নিত্যনতুন ফ্রক, স্কার্ট, লেহেঙ্গা, টু-পিস, থ্রি-পিস ও বোরকার দোকান হিসেবে পরিচিত আরডিএ মার্কেট। এ মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল হক জানান, ঈদ উপলক্ষে এখন প্রতিদিনই প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ক্রেতা বাড়ছে। কেনাকাটাও বাড়ছে বলে জানান তিনি। আরডিএ মার্কেটের আরেক পোশাক ব্যবসায়ী রানা বলেন, পাঁচ রোজার পর থেকে বেচাকেনা অনেক বেড়েছে। এবার বিক্রিও হচ্ছে ভালো। ক্রেতার ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। আরডিএ মার্কেটের শাড়ির দোকানের মালিক রকিবুজ্জামান বলেন, গতবারের মতো এবারও শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
এ মার্কেটে আসা ক্রেতারা জানান, গতবছর করোনার প্রভাব ছিলো। বাজারে ভীড় ছিলো না। কিন্ত এ বছর বাজারে ভিড়ও বেশি, কাপড়-চোপড়ের দামও অনেক। গতবছর বাচ্চার যে প্যান্ট কেনা হয়েছিল ৪০০ টাকায়, আজ ওই ধরনের প্যান্ট কিনলাম ১২০০ টাকায়। স্ত্রীর জন্য যে পোশাক গতবছরে কেনা হয়েছিল এক হাজার টাকায়। ওই একই ধরনের পোশাকের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০০-১৭০০ টাকা।’
নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা আলেয়া খাতুন সাহেব বাজারে এসেছেন শাড়ি ও থ্রি-পিস কিনতে। তিনি বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় থ্রি-পিসের দাম প্রায় ডাবল হয়েছে। যে থ্রি-পিসের দাম দুই হাজার ছিল এ বছর সেগুলোর দাম তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারে ঠেকেছে। শাড়ির দামও কিছুটা বেড়েছে।
রাজশাহী চেম্বার সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, এবার রোজার শুরু থেকেই বাজার পরিস্থিতি অনেক ভালো। এবার ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই বাজারে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাবেচা করতে পারছেন।
এদিকে এবারের ঈদেও ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্কের শাড়ি ও পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোষাক। চাহিদার যোগান দিতে ব্যস্ত রাজশাহীর রেশমপাড়ার শ্রমিকরা। এবার ঈদে সিল্কের কাপড়ের ওপরে হাতের কাজের শাড়ি ও পাঞ্জাবি এসে গেছে শোরুমগুলোতে। রাজশাহীর বিসিক এলাকায় অবস্থিত সিল্ক হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেছে দেদার কেনাবেচা শুরু হয়েছে।