এস আর,সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
দুদিন আগেও রাজশাহীর বাজারে ২০ থেকে ২০০ দাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল তরমুজ। তবে কোনো কারণ ছাড়ায় সেই তরমুজ রাতারাতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি তরমুজের দাম বেড়েছে থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
বর্তমানে বাজারে খুচরায় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। হঠাৎ করে তরমুজের দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ফলে দাম নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে বরিশাল, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, পটুয়াখালীর তরমুজ দ্রুত সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু বাজারে চাহিদা কমেনি। এখন বাজারে তরমুজের চাহিদা থাকায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
সোমবার রাজশাহী নগরীর শালবাগানে আড়তগুলোতে পাইকারে তরমুজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬৫ টাকা দরে। খুচরায় তরমুজ ক্রেতা সম্রাট করিম বলেন, গত শনিবার তরমুজ কিনেছিলাম প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে। তরমুজ আকারে ছোট ছিল। বড়গুলো ৫৫ টাকা প্রতি কেজি চাচ্ছিল। পাশেই ছোট আকারের বাহানের (মাচায় ঝুলন্ত) তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। তরমুজের এতো দাম বেশি হলে মানুষ কিনে খাবে কীভাবে।
শফিক ইসলাম নামের একজন জানান, এ বছর তরমুজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে গেল বলে মনে হচ্ছে। কয়েকদিন আগে সব জায়গায় তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেল। কিন্তু এখন সেইভাবে চোখে পড়ছে না। তিনি বলেন দুদিন আগেও ২০ টাকা দরে তরমুজ কিনেছেন তিনি। তবে এখন সেই তরমুজের দাম ৮০ টাকা।
রাজশাহীর ফল বিক্রেতা খন্দাকার মনিরুজ্জামান মিনার বলেন, সাধারণত রাজশাহীতে বরিশাল, পটুয়াখালী থেকে তরমুজ নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা। প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি ট্রাকে তরমুজগুলো আনা হতো। কিন্তু সেখানে বৃষ্টির কারণে আগেই নষ্ট হয়ে গেছে তরমুজ। ফলে সেই জায়গাগুলো থেকে তরমুজ আসছে না। তবে এখন খুলনা, দিনাজপুর ও জয়পুরহাট থেকে রাজশাহীতে তরমুজ আসছে।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে তরমুজের চাহিদা ভালো আছে। তবে তরমুজ কম। প্রতিদিন দুই থেকে তিন ট্রাক তরমুজ রাজশাহীতে নিয়ে আসা হচ্ছে। চাহিদা বেশি থাকায় ট্রাক থামার পরেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তরমুজগুলো।
খুচরা বিক্রেতা শমসের আলী বলেন, ৮০ টাকা দরে তরমুজ অনেকেই কিনছেন। আবার অনেকেই দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। রাজশাহী ফল ব্যবসায়ী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি শাহিন হোসেন কালু জানান, বাজারে তরমুজ অল্প। তার উপরে চাহিদা বেশি। এখন দাম বেশি চাষি পর্যায়ে। তাই গ্রাহক পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা তরমুজ বিক্রি করছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, ব্যবসায়ীরা বলছে সরবারহ কম। চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেশি।
তবে তরমুজ যে সব জায়গায় উৎপাদন হচ্ছে সেখানে দাম কম। মোকামে তরমুজ বিক্রি হয় পিস হিসেবে। বর্তমানে ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে কিনে বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। এটা অস্বাভাবিক বল মন্তব্য করেন তিনি।