সাঁথিয়া প্রতিনিধি :
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলাধীন আতাইকুলা থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর নগদের ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাই এর রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৮জনকে গ্রেপ্তার ও আলামত উদ্ধার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার(১৮এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং এ জানা যায়,গত ১৪ মার্চ পাবনা সদর থানার শালগাড়িয়া মহল্লার আবদুস সাত্তরের ছেলে নগদের ডিস্ট্রিবিউটর মামুনুর রহমান (৪১) ও তার ব্যবসায়িক মাঠকর্মী বগারামপুর মহল্লার হামিদুর রহমানের ছেলে ইয়াকুব ইসলাম বিশাল (২৩) এবং বড়দিকশাইল গ্রামের উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে তুহিন হোসেন (২২) পাবনা মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে একটি মোটরসাইকেল যোগে আতাইকুলা ও সাঁথিয়া থানা এলাকায় টাকা সরবরাহ করতে যায়। ওই দিন বেলা ১২ টার দিকে আতাইকুলা থানাধীন মাধপুর হাইওয়ে থানার দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে পাবনা-ঢাকা গামী হাইওয়ে রাস্তায় পৌঁছা মাত্র রেজিঃবিহীন একটি মোটরসাইকেলে থাকা তিন জন অস্ত্রের মুখে তাদের গতিরোধ করে এবং তাদের নিকট থাকা ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তারা আতাইকুলা থানায় ধারা-৩৯৪ পেনাল কোড মামলা করেন যার নং-১৫, তারিখ-২৮/০৩/২০২৩।
মামলার পর পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিক ভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান,আতাইকুলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম, ওসি ডিবি এমরান মাহমুদ তুহিন ও জেলা গোয়েন্দা শাখা পাবনার এসআই(নিঃ) সাগর কুমার সাহা এর সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ রহস্য উদঘাটনের নির্দেশনা প্রদান করেন।
তারা ওই ঘটনার রহস্য উদঘাটনের নিমিত্তে সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা, স্থানীয় গোপন সুত্র এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ১৫এপ্রিল (শনিবার) পাবনা শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাতভর অভিযান করে অত্র ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িতদের সনাক্ত পূর্বক আসামি শিস ইসলাম (২২),ইয়াছিন আলী ওরফে রাহাত (২১), রায়হান হোসেন (২১),ইমন হোসেন বাধন (২৪),তানভীর হোসেন (২১),শাহরিয়ার ইমতিয়াজ ওরফে রনি (২২), ইমরান শেখ (২৪),তুহিন হোসেনসহ (২৭),আটজনেকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ০২ রাউন্ড গুলি সহ একটি রিভলবার, দুইটি মোটরসাইকেল, হেলমেট, এবং একটি চাকু উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ১নং আসামি শিস ইসলাম নগদ কর্মী আসামি তুহিন এবং নগদ কর্মী ইমরান শেখ এর সহিত সপ্তাহ খানেক পূর্বে ওই ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা করে। ঘটনা সংঘটিত করার জন্য রিজন রাহাতের নিকট অস্ত্র সরবরাহ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন সকাল বেলা ইমরান শেখ কৌশলে শিস ইসলামকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অপর নগদ কর্মী তুহিন এর লোকেশন সরবরাহ করে। নগদ কর্মী তুহিনের সাথে শিস ইসলাম সহ অন্যরা মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হতে বিরত থাকে। উদ্দ্যেশ্য তুহিনকে কোন ভাবেই যেন সন্দেহ না হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক নগদ কর্মী তুহিন ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে রওনা দিলে পূর্ব থেকে পাবনা যুব উন্নয়নের সামনে অবস্থানকারী শিস ইসলাম সহ তার সাথে থাকা রাহাত ও রায়হানকে অপর নগদ কর্মী ইমরান মোবাইল এর মাধ্যমে লোকেশন দেয়। তার দেওয়া তথ্য মতে তুহিন যুব উন্নয়নের সামনে দিয়ে যাওয়ার পরপরই শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান একটি মোটরসাইকেলে এবং তানভির ও বাধন অন্য একটি মোটরসাইকেলে তাদের পিছু নেয়। একপর্যায়ে আতাইকুলা থানাধীন মাধপুর হাইওয়ে থানার সামনে পৌঁছালে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুহিন এবং তার সাথে থাকা নগদ কর্মী ইয়াকুব ইসলাম বিশাল এর কাছে থাকা সর্বমোট ৫লাখ ৭০হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা মোতাবেক শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান পথ পরিবর্তন করে ভিতরের রাস্তা দিয়ে চলে যায় এবং বাধন ও তানভির মহাসড়ক দিয়ে পুনরায় পাবনার দিকে যায়। পরবর্তীতে তারা আতাইকুলা থানাধীন শ্রীপুর বাজারের পাশে একটি ধান ক্ষেতে এসে মিলিত হয় এবং ছিনতাইকৃত টাকা ভাগাভাগি করে নেয়।