মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি,
প্রবেশপত্র না পাওয়ায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া ফজলুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. শামীম চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। ফরম ফিলাপের সময় বকেয়া এক হাজার টাকা না দিতে পারায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক তার প্রবেশপত্র আটকে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শামীম উপজেলার জুলগাঁও গ্রামের কৃষক মৃত আব্বাস আলীর ছেলে।
শামীম জানায়, তার বিদ্যালয়ের সব এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের জন্য তিন হাজার টাকা করে নেন প্রধান শিক্ষক নুরুল হক। সবাই ফরম ফিলাপের টাকা দিলেও শামীম আর্থিক সংকটের কারণে সে দুই হাজার টাকা দেয়। এক হাজার টাকা না দেয়ায় সব পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দিয়ে দিলেও শামীমের প্রবেশপত্র দেননি প্রধান শিক্ষক।
শামীমের মা শিরিনা বলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অনেক কষ্ট করে আমার ভাইয়ের বাড়িতে থেকে ছেলেটাকে একটু লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো করে - গড়ে তুলবো। তাই মানুষের কাছে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ছেলেটাকে এপর্যন্ত এনেছি। ফরম ফিলাপের জন্য (৩০০০) হাজার টাকা চাইছিল স্যার কিন্ত অনেক কষ্টে (২০০০) হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দেই। বাকি এক হাজার টাকার জন্য আমার ছেলের এডমিট দেয় নাই। আমি ওই শিক্ষকের বিচার চাই।’
শামীমের মামা বলেন, ‘আমার ভাগিনা শামীমের বাবা নেই। তারা আমার এখানে থাকে। তার কী অপরাধ ছিল যে পরীক্ষা দিতে পারল না। ১ হাজার টাকার জন্য আমার ভাগিনার এডমিট কার্ড দেয়া হয় নাই। এতিম ছেলেদের তো মানুষ এমনিতেই সাহায্য করে। সে পরীক্ষা না দিতে পারায় তার ভবিষ্যৎটা অন্ধকার হয়ে গেল। আমি সরকারের কাছে প্রধান শিক্ষক নুরুল হকের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্ত কোনও ভাবেই সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘শামীম নামের ছেলেটার ফরম ফিলাপ বা এডমিট না পাওয়ার বিষয়টা আমাকে কেউ জানায় নাই। আমি বিষয়টা জানলে আমার পরিষদ বা ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করতাম। আমি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ছেলের বাসায় এসে কথা বলেছি। এই ঘটনাটি যদি প্রধান শিক্ষক করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাই।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘আমাকে এ বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানোর পরে তাদের উপজেলায় আসতে বলা হয়েছে। আর একটি অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো তারা কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।