নিজস্ব প্রতিবেদক
ওপেক্স অ্যান্ড সিনহা টেক্সটাইল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মেডলার ফ্যাশন লিমিটেডকে ৮৫ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা জরিমান করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাজউকের উত্তরা জোনাল অফিসের সহ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এই জরিমান করা হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৬১, ৬৩, ৬৫ ও ৬৭ নং বাণিজ্যিক প্লট থেকে মোট ৮০ কাঠা মেডলার ফ্যাশনের নামে ২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮ হাজার ৮০ টাকায় বরাদ্দ দেয়া হয়। প্লটগুলো নিকুঞ্জ (উত্তর) এয়ারপোর্ট রোড সংলগ্ন বিমানবন্দরের খুব কাছে অবস্থিত। ন্যাম সম্মেলনের জন্য ঐ সময় বিভিন্ন দেশ হতে ভিআইপিদের বিমানবন্দরের কাছাকাছি থাকার জন্য আন্তর্জাতিকমানের একটি পাঁচ তারকা হোটেল তৈরির লক্ষ্যে এই প্লটগুলো মেডলার ফ্যাশন লিমিটেডকে বরাদ্দ দেয়া হয়।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের সাথে শর্তানুযায়ী মেডলার ফ্যাশন লিমিটেড ২০০৩ সালেই হোটেলটি তৈরির করার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছরে হোটেল নির্মাণতো দূরের কথা, একটি স্থাপনাও তৈরি করেনি এই প্রতিষ্ঠান। রাজউক মাঝেমধ্যে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ৮০ কাঠার প্লটে ইমারত নির্মাণের জন্য তাগিদ প্রদান করতো। কিন্তু মেডলার ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন কর্ণপাত করেনি। যার ফলে দীর্ঘ ২১ বছর যাবত প্লটগুলো অবহেলিত অবস্থায় খালি পড়ে আছে। অথচ চুক্তিপত্র অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে প্লট বরাদ্দ দেয়া হলে, রাজউকের শর্তাবলী না মানলে বা রাজউকের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে বরাদ্দকৃত ঐ প্লট বাতিলের ক্ষমতা রাজউকের এককভাবে রয়েছে। কোন অদৃশ্য কারণে রাজউক এই প্লটগুলোর ব্যাপারে এ যাবত কোন কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেনি। তবে রাজউক চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল শর্ত মোতাবেক ইমারত নির্মাণ না করায় ৮৫ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করে মেডলার ফ্যাশন লিমিটেডের কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি ইস্যু করে। পত্র জারির তারিখ হতে ১ মাসের মধ্যে জরিমানার সমুদয় টাকা পরিশোধ করার জন্য রাজউক নির্দেশ প্রদান করে।
জানা গেছে, রাজউকের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় জরিমানার এই বিপুল অংকের টাকা পরিশোধ না করার জন্য মেডলার ফ্যাশন লিমিটেডের কর্তাব্যক্তিরা উপায় খুঁজছেন ও রাজউককে ম্যানেজ করার জন্য লবিং করছে।
এ বিষয়ে রাজউকের উত্তরা জোনাল অফিসের সহ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, যেহেতু ন্যাম সম্মেলন হয়নি, মেডলার ফ্যাশন লিমিটেডও কোন হোটেল তৈরি করেনি, তাই রাজউকের শর্তানুযায়ী ৮০ কাঠার প্লটটির বরাদ্দ বাতিল করার এখতিয়ার রাজউকের রয়েছে। রাজউক বরাদ্দ বাতিল করে দেশি/বিদেশি উদ্যোক্তাকে পুনরায় বরাদ্দ প্রদান করতে পারে।