স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাবা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাবা যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তখন রবিউল ইসলাম নিঝুম ১০ম শ্রেণীর ছাত্র । বাবার শূন্যতাকে হাহাকার মন নিয়ে শুরু হয় জীবন যুদ্ধ। ঘর সামলে নিজেকে তৈরি করাটা চাট্রিখানি কথা ছিল না। নিজ ঘর ছেড়ে লজিং বাড়িতে থেকে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে থাকেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কখনও আড়ালে থেকে আবার কখনও সামনে থেকে কাজ করে গেছেন। জীবন যে থেমে থাকার নয় তার কিছুটা হলেও উদাহরণ তৈরি করেছেন তিনি। নিয়তিকে স্বাক্ষী রেখে অধম্য চেষ্টা করে করেছেন। ছোট থেকে ইংরেজির উপর দখল থাকায় মানুষের বাসায় গিয়ে প্রাইভেট আর কোচিং করেই জীবনের মোড় পাল্টে যায়। নিজে যতটুকু জানেন সেটুকু মানুষের মাঝে বিনিময় করে গেছেন। যদিও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভূক্ত শিক্ষক নন তবুও তিনি আদর্শের তালিকায় সফল শিক্ষক, তার হাতে গড়া শিক্ষার্থীরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই শিক্ষার্থীরা এখন দূর থেকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। নিজে চলার পথে হতে চেয়েছেন উদ্যোগক্তা। যার সম্পর্কে বলা হচ্ছে সেই তারুণের নাম রবিউল ইসলাম নিঝুম। সময়ের সাথে কত খড়কুটো পারি দিয়ে এগিয়ে চলতে হয় তার উদাহরণ তিনি নিজেই।
রবিউল ইসলাম নিঝুম এর পিতার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু কোরবান আলী, মাতা মোছাঃ রোকেয়া বেগম। তিনি ১৯৯০ সালের ১০ জানুয়ারি লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ঢাকনাই গ্রামে জম্মগ্রহণ তরেন। পিতা ছিলেন হারাটি ইউনিয়নের সাবেক তিন নম্বর ওয়ার্ডে দুইবারের ইউপি সদস্য। তাই বাবার মতো চিন্তা করেন সামাজিকতা নিয়ে। ৬ ভাই বোনের মধ্যে রবিউল ইসলাম সবার ছোট। বাবার মৃত্যুর পর আস্তে আস্তে বাকি ভাই বোনেরা দুরে সরে যেতে থাকে। তাই নিজেকে তৈরি করার জন্য লেখা পড়াকে থামিয়ে রাখেননি।
ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা চালিয়েছেন, এখন তিনি সরল খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালিন শিক্ষক হিসেবে আছেন। এর আগে সাকোয়া মঞ্জিল বিএম কলেজে ও গ্র্যান্ড আকবর আইডিয়াল মাদ্রাসাতে কিছু দিন শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। এছাড়াও কনফিডেন্স কোচিং সেন্টার, ত্রিভুজ একাডেমি, সেলফ রিলায়েন্স কোচিং সেন্টার, মামুন একাডেমি, আল্টামর্ডাণ কোচিং সেন্টার, মেরিট কোচিং সেন্টার, সাফল্য ছোঁয়া কোচিং সেন্টার, আইডিয়াল কোচিং সেন্টার ও ফেন্ডস কোচিং সেন্টারে একজন দক্ষ ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে জড়িয়ে ছিলেন। এসবের পাশাপাশি নিজেও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কনটেস্ট কোচিং সেন্টার ও ইউনিক স্টাডি হোম। তার লেখা একটি ইংরেজি বইও রয়েছে, Bkash Exclusive English Grammar and Composition
তিনি ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বি এস এস পাশ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন। তার মধ্যে 'বর্ণ পরিচয়' কমিটির সভাপতি, 'চন্ডীমারি' কমিটির সাবেক সভাপতি, 'বন্ধু'কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, 'সেবা নীড়' সদর কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এবং 'হাসিউস সুন্নাহ মডেল মাদ্রাসার' অভিভাবক সদস্য।
তার রয়েছে অল্প সময়ে মানুষের হৃদয় জয় করার মতো কথা বলার দারুণ কৌশল। ছাত্র জীবনে জড়িত ছিলেন লালমনিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাথে, সেই সাথে হারাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাথেও জড়িত থেকেছেন। এখন হারাটির ৯ নং ওয়ার্ডের
আওয়ামী লীগ কমিটির সদস্য।
মহেন্দ্রনগর খান মার্কেট সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। সেখানে চারজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সবকিছুর মধ্যেই এখন সময় কাটে সেখানে। শখের বাড়ি করে সেখানে স্ত্রী, সন্তান ও মা-কে নিয়ে সুখের সংসার জীবন কাঠাচ্ছেন।