মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো,শেরপুর প্রতিনিধি :
আপন চাচা কর্তৃক নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভাতিজা ও ভুক্তভোগীর স্বামী আবু রাসেল।
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বৈশাখী বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আপন চাচা সুরুজ মিয়া’র কু-কীর্তি তুলে ধরে শুধু ভাতিজা নয়, ভুক্তভোগী তরুণী গৃহবধূ, তার শাশুড়ি ও মা বিচার প্রার্থনা করেছেন।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের কালাকুমা গ্রামের এক তরুণীর সাথে প্রায় ৬ মাস আগে পারিবারিকভাব বিয়ে হয় মায়াঘাসি গ্রামের পাথরশ্রমিক আবু রাসেলের। বিয়ের কিছুদিন পর রাসেলের আপন চাচা সুরুজ মিয়া তার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি রাসেল ও তার মা জানতে পেরে সুরুজকে বাড়িতে যেতে মানা করে। একপর্যায়ে গত ১৭ মার্চ রাতে ঘরে কেউ না থাকায় সুরুজ আপন ভাতিজার স্ত্রীর কাছে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় ওই গৃহবধূ ধস্তাধস্তি শুরু করলে সুরুজ পালিয়ে যায়। পরদিন ১৮ মার্চ লজ্জায় ওই গৃহবধূ বাবার বাড়ি চলে আসে ও নানা ধরণের ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আপন চাচা শ্বশুড়ের কু-কীর্তির কথা জানায়। এসময় তাকে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে সুরুজ আলীকে গৃহবধূর বাড়িতে আটকে রাখা হয়। পরে উভয় গ্রামের ইউপি সদস্য পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার কাছে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর সুরুজ আলী দোষ স্বীকার করলে সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে গঠিত জুরিবোর্ড গৃহবধূর অসুস্থতার জরিমানা বাবদ ক্ষতিপূরণ ধার্য করে বিষয়টি মিমাংসা করেন।
কিন্তু পরে সুরুজ মিয়া ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ২৮ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, আপন ভাজিতা ও ভাবীসহ কয়েকজনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করে।
অন্যদিকে জুরিবোর্ডের বিচার না মেনে হয়রাণী করায় স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে ৪ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ভুক্তভাগী গৃহবধূর স্বামী আবু রাসেল। এঘটনায় বিরোধ বাড়তে থাকলে গত ২৬ মে শুক্রবার অভিযুক্ত চাচা সুরুজের হয়ে তারই সমন্ধি ও নয়াবিল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার ছেলে ব্যবসায়ী রাজিবকে চারআলী বাজার এলাকায় আটকে মারধর করে। পরদিন ২৭ মে শনিবার খোরশেদ আলম খোকা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করলে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রোববার জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এদিকে সোমবার এ মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামী অভিযুক্ত চাচা সুরুজ মিয়া, তার স্ত্রী সাজেদা খাতুনসহ চারজন আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালত তাদেরও জেলহাজতে পাঠায়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভাগী গৃহবধূ, তার স্বামী আবু রাসেল, শাশুড়িসহ সংশ্লিষ্ট স্বজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।