নিজস্ব প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় দীর্ঘ ২১বছর পলাতক থাকার পর
ব্যবসায়ী "জানে আলম" হত্যা মামলার মৃত্যূদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ আয়ুব আলী’কে হাটহাজারী থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১৭জুন আভিযানে হাটহাজারী থানাধীন ফতেহাবাদ এলাকায় অবস্থানকালে আসামী আয়ুব আলী (৭০), পিতা- মৃত ইয়াকুব মিয়া, সাং- আমিরাবাদ, থানা- লোহাগাড়া, জেলা- চট্টগ্রামকে আটক করতে সক্ষম হয়।
গত ৩০ মার্চ ২০০২ইং আদালতে স্বাক্ষী দেওয়ার প্রাক্কালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্থানীয় কিছু দুস্কৃতিকারী ও সৈয়দ বাহিনীর সদস্যরা ব্যবসায়ী জানে আলম (৪৮) কে তার ০১ বছরের শিশু বাচ্চার সামনে নির্মম ও নৃশংসভাবে প্রথমে লাঠি সোটা, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং পরবর্তীতে মৃত্যূ নিশ্চিত করার জন্য গুলি করে হত্যা করে। যা সেই সময়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিম এর বড় ছেলে মোঃ তজবিরুল আলম বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মাত্র চার মাস পূর্বে অর্থাৎ গত ০৯ নভেম্বর ২০০১ ইং তারিখে নিহত ভিকটিম এর আপন ছোট ভাই অর্থাৎ বাদীর আপন ছোট চাচাকে ঐ বাহিনী একইভাবে নির্মম ও নৃশংসভাবে প্রথমে লাঠি সোটা, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং পরবর্তীতে মৃত্যূ নিশ্চিত করার জন্য গুলি করে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায়ও লোহাগাড়া থানায় ১৩ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এই মামলাতেও আয়ুব আলী অন্যতম প্রধান আসামী ছিলেন।
ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যায় দায়েরকৃত মামলার ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত গত ২৪ জুলাই ২০০৭ইং রায়েবিজ্ঞ আদালত ১২ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ০৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণার পর আসামীগন মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে আপীল করলে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট আসামী আয়ুব আলীসহ মোট ১০জনকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত ও ২জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বাকীদের খালাস দেন।
গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে,ব্যবসায়ী জানে আলমের হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী এবং উক্ত মামলার ২১বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত আসামী আয়ুব আলী হাটহাজারী থানাধীন ফতেহাবাদ এলাকায় অবস্থানকালে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় ২১বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত আসামী বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ডের মুল কারণ হিসেবে জানা যায় যে,ব্যবসায়ী জানে আলম (৪৮) গত ০৯ নভেম্বর ২০০১ইং তার আপন ছোট ভাইয়ের হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী জানে আলম পরিবারের বড় ছেলে এবং আর্থিকভাবেও কিছুটা স্বচ্ছল ও মামলা-মোকদ্দমার ব্যয়ভার তিনি বহন করতেন। প্রতিপক্ষের ধারনা জানে আলকে হত্যা করলে ঐ পরিবারের মামলা-মোকদ্দমা চালানো ও প্রত্যক্ষভাবে আর কোন সাক্ষীও থাকবে না। ঘাতক চক্র প্রকাশ্যে দিবালোকে জানে আলমকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে। কারণ আর্থিকভাবে দূর্বল করা ও তার সকল সম্পত্তি সহজে তারা গ্রাস করতে পারবে।
আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব সহকারি সিনিয়র পরিচালক নূরুল আবছার।