নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ১৬৫ নং দক্ষিন বাগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগমের সিন্ডিকেটে জিম্মি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।স্থানীয় সহকারি শিক্ষক মোঃ ইমলাক হোসেন, লাবণী খানম ও প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম মিলে গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট।
এই সিন্ডিকেটের দূর্নীতি,অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন এলাকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।এমনকি বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন মোঃ ইমলাক হোসেনের স্ত্রী সুমি খানম ও সহকারি শিক্ষক লাবনীর স্বামী মোঃ সাহাবুদ্দিন মোল্য(সাবু)।
স্থানীয় এই তিন শিক্ষকের দূর্নীতি,অনিয়মের অভিযোগ করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়।মোঃ ইমলাক হোসেন, লাবণী খানম ও প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম স্থানীয় হওয়ায় এলাকায় প্রভাব ও শক্তি খাটিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে অভিযোগকারীদের ভয় ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,নড়াইল সদর উপজেলার ১৬৫ নং দক্ষিন বাগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিবাবকবৃন্দ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফালী খানমের স্বেচ্ছাচারিতা,অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষারমান ও পরিবেশ ধংসের দ্বারপ্রান্তে মর্মে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির ছাড়পত্র বাবদ ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা ও শিশু শ্রেণিতে ভর্তিতে ৫০/-(পঞ্চাশ)টাকা ও প্রথম শ্রেণিতে ১০০/-(একশত)টাকা গ্রহণ , নিয়মিত সমাবেশ না হওয়া,মাঝে মাঝে সমাবেশ হলেও প্রধান শিক্ষক সমাবেশে অংশগ্রহন না করে অফিসে বসে থাকেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে টয়লেট পরিস্কার করানোসহ টয়লেটে পানি তোলোনো, বিদ্যালয়ের নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল পেড়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া, অভিবাবকদের সাথে দূব্যর্বহার করাসহ ১১টি বিষয়ে অভিযোগ করেন।
প্রধান শিক্ষকের পছন্দের স্থানীয় সহকারি শিক্ষককে মোঃ ইমলাক হোসেন ও লাবণী খানমের সহযোগীতায় এ সব অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন।এমন কি ঐ পছন্দের শিক্ষকরা স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতা বাসায় নিয়ে স্বাক্ষর করেন।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমীক সুপারভাইজার সজল কুমার বিশ্বাসকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। গত ১৪ আগষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা সজল কুমার বিশ্বাস প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগমকে অভিযোগের কপি সরবরাহ করেন।এরপর সহকারি শিক্ষক মোঃ ইমলাক হোসেন ও প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম অভিযোগকারিদের বাড়ি গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সামনে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন।
দক্ষিন বাগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তন্নু মিনাসহ নাম প্রকাশ না করে অভিভাবকেরা বলেন, প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগমের নামে আগেও অভিযোগ করা হয়েছিল।
সেই অভিযোগে পার পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই সিন্ডিকেট।
নতুন অভিযোগের তদন্তের আগে ইমলাক হোসেন ও প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম অভিযোগকারিদের মুখ বন্ধ করতে নানা ভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া রুটিন মেইনটেন্স,স্লিপের টাকার ভূয়া বিল-ভাউচার করে আত্নসাত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগকারী এক অভিভাবক বলেন,সহকারি শিক্ষীকা লাবনীর স্বামী মোঃ সাহাবুদ্দিন মোল্য(সাবু) রাত ১০টার সময় আমার বাড়ির সামনে এসে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুললে ঠ্যাং ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দেয়।
অভিভাবকেরা এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগমের শাস্তিসহ অনতিবিলম্বে বদলীর দাবি করেন।
এ বিষয়ে সহকারি শিক্ষককে মোঃ ইমলাক হোসেন বলেন, অভিযোগ প্রত্যাহারে কাউকে ভয় ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে না।তবে প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে সবার কাছে শেষ বারের মতো মাফ চেয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগমকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,ভয়-ভীতি দেখানোর কিছু নেই। অভিযোগকারিদের আমার অফিসে আসতে বলেন।
Leave a Reply