সাঁথিয়া প্রতিনিধি :
পাবনার সাঁথিয়ায় আসাদুল নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হাত পা বেঁধে বেধরক মারধর করে জখমী করার ঘটনার সাথে জড়িত দুই শিক্ষককে আসামি করে গত সোমবার রাতে (১১ সেপ্টেম্বর) থানায় মামলা করেছেন নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা। নির্যাতনে সহযোগিতা করায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষক শাহাদৎ হোসেনকে(১৯)কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সে বগুরা জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার পূর্বধারাবর্ষা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।মূল নির্যাতনকারী শিক্ষক ইকবাল হোসেন(২২)পলাতক রয়েছে।
থানায় মামলা সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের হাড়িয়াকাহন বাইতুল উলুম নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন শিবরামপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল(১০) অসুস্থ্যতার কারণে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় বাড়িতে অবস্থান করে। গত ৩ সেপ্টম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী সজীব(১৩) ও সিয়াম(১০) কে সঙ্গে করে শিক্ষক ইকবাল হোসেন আসাদুলকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ডেকে আনে। অনুপস্থিত থাকার অপরাধে আসাদুলকে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক শাহাদৎ হোসেনের সহযোগিতায় রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে,মাথা টেবিলের নীচে দিয়ে কোমড়ের নিচে বেত এবং স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধরক মারপিট করে জখম করে। একপর্যায়ে আসাদুল অচেতন হয়ে যায়। এ সময় তাকে কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। আসাদুলের মা শোভা খাতুন খবর পেয়ে মাদ্রাসায় ছুটে যান। গিয়ে ছেলেকে খুঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দেখতে পান মাদ্রাসার কক্ষে হাত পা বাঁধা অবস্থায় কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এ সময় তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দিন রাত ১টার দিকে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন তার পরবিার।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা ভ্যান চালক আনোয়ার হোসেন জানান,আমার ছেলেকে অমানবিকভাবে মারধর করে জখম করার বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা চিকিৎসার খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দেন এবং ন্যায় বিচারের আশ্ববাস দিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন। ন্যায় বিচার না পেয়ে টাকা ফেরৎ দিয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে।বর্তমানে ছেলেকে বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পরিবারকে থানায় মামলা করতে নিষেধ করার ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী বলেন,আমরা ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কারের(ইস্তফা) ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাবে যার কারণে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন হবে এবং প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ভর্তির ওপড় প্রভাব পড়বে বা ছাত্র পাওয়া যাবেনা। শিক্ষার্থীর চিকিৎসা বাবদ খরচ দেওয়া হয়েছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)রফিকুল ইসলাম বলেন,শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক শাহাদৎ হোসেনকে গত সোমবার রাতে মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেল হাজতে প্রেরন করা হয়ে এবং অপর শিক্ষক ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।