মোহাম্মদ মাসুদ বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত প্রধান আসামী হারুন অর রশিদ (৫২)’কে দীর্ঘ ১০বছর পর গ্রফতার করেছে র্যাব ৭,চট্টগ্রাম।
২০ সেপ্টেম্বর র্যাব-৭,এবং র্যাব-১,উত্তরা এর যৌথ অভিযানে আসামী হারুন রশিদ (৫০),কে আটক করে।
আটককৃত এর পিতা-মৃত অলি আহমদ, সাং- শিলাইগড়া, থানা- আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম এর বাসিন্দা।
নিহত ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদ (২৩) চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানাধীন শিলাইগড়া এলাকার বাসিন্দা। জলাশয়ে জাল ফেলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদ এবং ধৃত আসামী হারুন রশিদের ভাই জাহেদ হোসেন@টিটু’র সাথে কথা কাটাকটি হয়। কথা কাটাকটির এক পর্যায়ে জাহেদ হোসেন বিষয়টি তার বড় ভাই হারুন রশিদ’কে মোবাইল ফোনে জানালে হারুন রশিদ তৎক্ষনাৎ তার অপর সহোদর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন’কে সঙ্গে নিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র কিরিচ, দা ও লোহার রড নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। এসময় ধৃত আসামী হারুন রশিদের হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদ’কে মাথায় আঘাত করে। উক্ত আঘাতে মোহাম্মদ সাহেদ রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হারুন রশিদের সহোদর দুই ভাই আনোয়ার হোসেন এবং জাহেদ হোসেন তাদের হাতে থাকা ধারালো কিরিচ ও লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। এ সময় ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদ এর চিৎকার শুনে আশে-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে হারুন রশিদ এবং তার সহোদর দুই ভাইদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম অবস্থায় ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদ’কে উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ নিয়ে যায়। কর্তব্য চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। পরবর্তীতে ভিকটিম মোহাম্মদ সাহেদের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে বেড খালি না থাকায় সার্জিস্কোপ হাসপাতাল ইউনিট-২, কাতলগঞ্জ, চট্টগ্রামে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ০২ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১১৪৫ ঘটিকায় মৃত্য বরণ করেন।
উক্ত মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত ভিকটিমের চাচা বাদী হয়ে গত ২০ জুলাই আনোয়ারা থানায় হারুন রশিদকে প্রধান তার সহোদর দুই ভাইকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা রুজু হওয়ার পর আসামীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আতœগোগনে চলে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ প্রতিবদেন এবং সাক্ষিদের সাক্ষ্য প্রদানের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আসামীর অনুপস্থিতিতে আমৃত্যু যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, গোপন সংবাদে,বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান আসামী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকায় অবস্থানকালে আসামিকে আটক করে।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান এবং আমৃত্যু যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply