নিউজ ডেস্কঃ
কয়েকজন সংসদ সদস্যের বাধায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান নিয়োগ এনটিআরসিএর হাতে দেয়া যায়নি। শুধু এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো এনটিআরসিএকে। সে ঘটনা ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের। তারপর থেকেই প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগও এনটিআরসিএর হাতে দেওয়ার দাবি জোরালো হয়ে উঠতে উঠতে এখন তুঙ্গে। এমন প্রেক্ষাপটে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক কর্মশালা ডাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার ছিলো সেই কর্মশালার দিন। কিন্তু গত শনিবার পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে সারাদেশের সরকারি কলেজ ও শিক্ষা ক্যাডার পরিচালিত শিক্ষার অধিদপ্তর ও দপ্তরগুলোতে সারাদিনের কর্মবিরতির ডাক দেয় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। সমিতির প্রধান অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক পদে রয়েছেন। তিনি গতকাল সারাদিন কর্মবিরতি পালন করেছেন। অপরদিকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি কর্মশালা শুরুর নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে যোগ দেন। এমন বাস্তবতায় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা গতানুগতিক আলোচনা করেন এবং আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। যা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
কর্মশালা শেষে কর্মকর্তারা জনতার কথা২৪ কে জানান, নানা ধরনের মতামত ও প্রস্তাবনা এসেছে। বেশিরভাগ কর্মকর্তাই বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান নিয়োগের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে, এনটিআরসিএকে অধ্যক্ষ-প্রধান-সহকারী প্রধান নিয়োগের দায়িত্ব দিতে আইন সংশোধন করতে হবে। এদিকে এনটিআরসিএ আইনের একটি খসড়া অনুমোদনের অপেক্ষায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আছে। তাই নতুন করে ফের আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন কর্তারা। এ পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ-প্রধান-সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান কমিটির হাতে থাকবে, না এনটিআরসিএর কাছে যাবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি শিক্ষা প্রশাসন। নানা প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করেই শেষ হয়েছে ‘অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম দূরীকরণ ও মানসম্মত প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগে করণীয় নির্ধারণের’ কর্মশালা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে অধ্যক্ষ-প্রধান-সহকারী প্রধান নিয়োগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
জানা গেছে, অন্য একটি অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় কিছুটা দেরিতে অংশ নেন। কর্মকর্তাদেরও কেউ কেউ কর্মশালায় অনুপস্থিত ছিলেন। তাই নানা মুনির দেয়া নানা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেই কর্মশালা শেষ হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গতকাল সন্ধ্যায় জনতার কথা২৪কে জানান, সভায় কর্মকর্তারা অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান নিয়োগ নিয়ে নানা প্রস্তাব দিয়েছেন। এনটিআরসিএর মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দিতে আইন সংশোধন করা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে কর্মশালায়। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করেই কর্মশালা শেষ হয়েছে।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী এন্ট্রি লেভেলে (প্রভাষক, সহকারী শিক্ষক) শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএর। আর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান ও কর্মচারীদের নিয়োগ এখনও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা কমিটির/পর্ষদের হাতে। এসব নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ বিস্তর।