মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি।
শেরপুরের শ্রীবরদীতে এক হাজার ছত্রিশ হেক্টর জমির ধান ও সবজি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সিংগাবরুণা, রাণীশিমুল, কাকিলাকুড়া, গড়জরিপা, কুড়িকাহনিয়া, খড়িয়া কাজিরচর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের আমন ধান ও সবজি পানির নিচে রয়েছে। ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৯২৩ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ও ১১৩ হেক্টর জমির সবজি খেত নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষকদের দাবি পানির নিচে থাকা রোপা আমন, মাসকালাই, শাকসবজি সহ বিভিন্ন ফসল বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে যাবে। আর স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলেছেন, কয়েকদিনের মাধ্যে পানি নেমে গেলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। অপরদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে উপজেলার প্রায় ২৫ টি পুকুরের ২১ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এতে করে মৎস্য চাষীদের প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হবে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে অনেক কৃষকের আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবিজ খেতে পানি উঠেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এতে করে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে সাধারণ কৃষকরা। পানি দ্রুত সরে না গেলে, ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলে ধারনা করছে কৃষকরা। রাণীশিমুল ইউনিয়নের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমার ২ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি না নেমে গেলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। সিংগাবরুণা ইউনিয়নের কৃষক হেলিম উদ্দিন বলেন, ২ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। টানা বর্ষণে ধান এখন পানির নিচে। ফেরদৌস আলম বলেন, আমার ৩ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে ধান চাষ করেছি। অবস্থা এইরকম থাকলে মনে হয় ফসল ঘরে তুলতে পারবো না।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাবরিনা আফরিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ইতিমধ্যে ফসল নিমজ্জিত হওয়ার রিপোর্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পানি দ্রুত সরে গেলে ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফতেখার ইউনুস বলেন, বিভিন্ন এলাকার নিমজ্জিত ফসলের ধান খেত পরিদর্শন করে কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সর্বদা কৃষকদের পাশে থাকবে।
সংবাদদাতা, মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো,
শেরপুর প্রতিনিধি,
Leave a Reply