মোহাম্মদ মাসুদ বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম ও দীর্ঘতম একমাত্র সুরঙ্গপথ। যার নামকরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।”বঙ্গবন্ধু টানেল” শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নদী বিচ্ছিন্ন দক্ষিণ চট্টগ্রামে খুলবে বৃহৎ শিল্পের নতুন দুয়ার। প্রসারিত হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পরিবর্তন ও উন্নত হবে স্থানীয় এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মান ও দেশের অর্থনীতি।
আজ ২৮ অক্টোবর,দুপুর ১২ প্রধানমন্ত্রী প্রথম টোল প্রদানের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হয়। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল। জমকালো আয়োজনে ও নানান আনুষ্ঠানিকতায় অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনের ধারাবাহিক যাবতীয় অনুষ্ঠানিকতায়।টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সুন্দর সফলভাবে সুসম্পন্ন হয়েছে।
টোল প্রদানে সময় হাস্যজ্জল আনন্দ ঘন পরিবেশে টোল গ্রহিতার সাথে তিনি কুশল বিনিময় করেন। উদ্বোধনের পরদিনই টানেলের ভেতরে যান চলাচল সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।দীর্ঘ সময় ও নানা বাঁধা প্রতিবন্ধীকতার অবসানে সকল চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে বাস্তবায়নে সফল ও সক্ষম হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারা প্রান্তে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন সরকারের চট্টগ্রামসহ সারা দেশের উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে নানা বাজেট ও প্রজেক্ট নিয়ে।
সাড়ে চার বছরের নির্মাণযজ্ঞ শেষে খুলে দেওয়া এই টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্তর ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।
সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন,টানেলের মধ্যে জনসাধারণের জন্য নির্দেশনা ব্যবস্থা থাকবে এবং সেখানে ৮টি রেডিও চ্যানেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশনাগুলো চলতে থাকবে। টানেলের ভেতর যেই ফ্রিকুয়েন্সি থাকুক না কেন, গাড়ি যতক্ষণ টানেলে থাকবে ততক্ষণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ দিক নির্দেশনা চলবে।’টানেলে কোন গাড়ি চলতে পারবে এবং কোনটি চলতে পারবে না সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। টোল হার নির্ধারণ হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে যা আমরা বিবেচনা করছি,বলেন তিনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে টোল মওকুফের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গাড়ি বহর নিয়ে যাবার সময় টোল দেন। এখানে টোল অব্যাহতির কোনো সুযোগ নেই। তবে যারা অন কল বা অন ডিউটিতে ইমার্জেন্সিতে থাকবে তাদের টোল দিতে হবে না।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে চীনের চায়না কমিউনিকেশনস, কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসিএল) লিমিটেড। টানেল সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-
কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে। বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার। এই সুড়ঙ্গটি বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদী তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ।টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। নগরের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক রয়েছে।
কর্ণফুলী নদী সারা দেশ থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে আলাদা করেছে। প্রায় ৯১ বছর আগে প্রথম নির্মাণ কালুরঘাট রেলসেতু থেকে ৭ কিলোমিটার ভাটিতে ১৯৮৯ সালে ৩৪ বছর পরে প্রথম সড়ক সেতু নির্মাণে নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় ২০১০ সালে একই স্থানে কর্ণফুলী তৃতীয় শাহ আমানত সেতু নির্মাণ করা হয়।
টানেল নিয়ে মিথ্যা বা নেতিবাচক প্রচারণার বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মিথ্যা নেতিবাচক প্রচারণা চালালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবেন।
Leave a Reply