৩রা নভেম্বর শোকাবহ জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নেতার স্মরণে আজ ৩রা নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১১টায় ঢাকার নাজিম উদ্দীন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত কারা স্মৃতি জাদুঘরে শহীদ জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। শহীদ জাতীয় চারনেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, সহ-সভাপতি শাহীন মাতুব্বর, দপ্তর সমন্বয়ক মুহাম্মদ নূর আলম সরদার, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি থান্দার মনিরুজ্জামানসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচীর শুরুতে জাতীয় চারনেতার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “আজ ৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। বাঙ্গালি জাতির জীবনে এক কলঙ্কজনক দিন। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানের দোসররাই জাতীয় চারনেতাকে অন্ধকার কারাগারে বিনা বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতার আদর্শ ধারণ করে আমরা তরুণ প্রজন্মরা এগিয়ে যেতে চাই। জাতীয় চারনেতার হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসর খুনী জিয়া-মোশতাকের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পাকিস্তান নামক জঙ্গি রাষ্ট্র সেদিন স্বাধীন বিরোধী চক্র জিয়া-মোশতাককে মদদ দিয়ে ১৫ আগস্ট ও ৩রা নভেম্বর সংঘটিত করে বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাত আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।রাজনীতির নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও শহীদ জাতীয় চারনেতার আদর্শ ধারণ করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য বিএনপি-জামাতের রাজাকারদের বিরুদ্ধে আমাদের এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “রক্তাক্ত ৩রা নভেম্বর শোকাবহ জেলহত্যা দিবসে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান ও শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর একই বছরের ৩রা নভেম্বরে জাতীয় চারনেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তান সরাসরি জড়িত ছিল।পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করেছিল খুনী জিয়া-মোশতাক চক্র। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই মূলত এসব জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল পাকিস্তান। একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করে খুনী জিয়া-মোশতাক চক্রের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করার দাবি জানাচ্ছি। পাকিস্তানের দালাল খুনী জিয়া-মোশতাকের ষড়যন্ত্রে সেদিন রাষ্ট্রের নিরাপদ জায়গা কারাগারেও বিনা বিচারে জাতীয় চারনেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে খুনী জিয়া-মোশতাক চক্র কর্তৃক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘৃণ্য ইতিহাসের দায় বিএনপিকে নিতে হবে। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তান নামক জঙ্গি রাষ্ট্রকে এই হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সরকারের নিকট দাবি, শোকাবহ ৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবসকে রাষ্ট্রীয় ভাবে পালন করতে হবে। নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের পরিপূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরার জন্য জাতীয় চারনেতার সংগ্রামী জীবন ও কর্ম সকল শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে সিলেবাস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আজকের এই দিনে শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার শপথ নিতে হবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানের দোসর বিএনপি-জামাতের হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
Leave a Reply