নিজস্ব প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জে মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে মাহিদুল ইসলাম ভূইয়া বাদী হয়ে মহিলা মেম্বারসহ ৫ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত কাজী পিয়ারা সদর উপজেলার বাঘিয়া গ্রামের সোনামুদ্দিনের স্ত্রী এবং ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেম্বার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী মাহিদুল ইসলাম ভূইয়া সদর উপজেলার কোণাবাড়ি মৌজার ৮১নং জোত ও ৭৭৮ নং জোতের ২৪২ শতাংশ জমি ২০১১ সাল থেকে বর্গা চাষ করে আসছে। ২০১১ সালে মামলার বাদীসহ ৫ জন মিলে ওই জমি ৫৪ লক্ষ ৬ হাজার টাকা মূল্যে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর বাদী একটি বায়না দলিল করেন। পরবর্তীতে বাদীর আর্থিক সংকটের কারণে নিজের অংশের ভূমি ক্রয় না করতে পারলে অন্য ৪ জন মিলে ৩৫৫০ এবং ৫৬২৯ নং দলিল মূলে ক্রয় করে নেন। ক্রেতাদের সাথে বাদীর পূর্ব পরিচিত থাকার ফলে বাদী দীর্ঘদিন যাবত ওই জমি বর্গা চাষ করে আসছে। ওই জমি কেনা বেচা নিয়ে আসামী মহিলা মেম্বার কাজী পিয়ারার সাথে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে বাদীকে বিভিন্ন সময় আসামী মহিলা মেম্বার তার পদ পদবী ব্যবহার করে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে মহিলা মেম্বার কাজী পিয়ারা তার বাহিনী নিয়ে বেআইনী ভাবে বাদীর রোপন করা সরিষার মধ্যে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়ে সরিষা নষ্ট করে দেয়। এরপর বাদী গত ২৬ নভেম্বর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত সদর থানায় পাঠিয়েছে।
মামলার বাদী মাহিদুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, মহিলা মেম্বার একজন ভূমিদূস্য। তার একটি নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। তিনি তার পদ পদবী ব্যবহার করে গত ১৭ নভেম্বর আমার বর্গা আবাদি জমি জোর করে দখল করে নিয়ে তিনি সরিষা রোপন করেছে। এবং আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দামকি দেয়া হচ্ছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে আসছি।
স্থানীয় মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি জানান, মহিদের সরিষা ক্ষেত মহিলা মেম্বার ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়েছে শুনেছি। এবং মহিদ আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর মহিলা মেম্বারকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বসতে চাই আমরা। কিন্তু মহিলা মেম্বার বসতে রাজি হয়নি। ওই জমি তো মহিলা মেম্বারের না। কিভাবে ওনি দখল নিয়েছে জানি না।
স্থানীয় আরেকজন বাসিন্দা সাঈদ বলেন, মহিদ ভূইয়া দীর্ঘদিন যাবত ওই জমি চাষ করে আসছে আমরা দেখছি। এবারও মহিদ জমিতে সরিষা লাগিয়েছে। আর সেই সরিষার উপর মহিলা মেম্বার ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিয়ে ওনি সরিষা লাগিয়েছে। মহিলা মেম্বার ও তার ছেলে একপর্যায়ে জোর করেই ওই জমি দখল করেছে। জমি দখলের আগে মহিলা মেম্বার বাজারের মধ্যে বলেছে আমি কাজী পিয়ারা ওই জমি দখল করবো দেখি কি হয়। আর সত্যি সত্যি তিনি দখল করে নিয়েছে। ওই জমি মহিলা মেম্বারের না। তিনি পারতেন এলাকায় বসে মহিদের সাথে কথা বলতে। আমাদের এলাকার মোজ্জামেল ভাই মহিলা মেম্বারের সাথে এবিষয়ে কথা বলেছিল। কিন্তু মহিলা মেম্বার কোন পাত্তা দেয়নি।
ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, জমিজমা নিয়ে একটি ঝামেলা চলছে। কার জমি কে ভোগ করে জেনে পরে আপনাকে জানাবো।
এবিষয়ে ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার কাজী পিয়ারা বলেন, আমি মহিদের জায়গা দখল করি নাই। আমি ন্যায় বিচারক হিসেবে এলাকার আরশেদ হাজীর ছোট ছেলে পক্ষে কাজ করছি। আরশেদ হাজীর ছোট ছেলের জমি মহিদ দখল করে ভোগ করছে। আর সেই জমি আমি দখল করেছি। মহিদের কত বড় সাহস ওই আমার নামে আবার মামলা করেছে। থানায় থেকে পুলিশ তদন্তে আসছিল তারা দেখে গেছে।
এবিষয়ে ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর জলিলের মুঠোফোনে একাধিকবার।স ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর বাবুল আহম্মেদ বলেন,মামলাটি আমি তদন্ত করছি। এখনো তদন্ত শেষ হয়নি।