চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ::
গত ৭ জানুয়ারি দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশের চারদিনের মাথায় নতুন সরকার শপথ নিতে যাচ্ছে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ হবে বুধবার (১০ জানুয়ারি) আর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় হবে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ। বঙ্গভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় শপথ নেবে আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে একাদশ সংসদের সরকারের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৫ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী আছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ পূর্ণ মন্ত্রী ২৪, প্রতিমন্ত্রী ১৮ ও উপমন্ত্রী ৩ জন।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার শপথ। কারা স্থান পাবে আর কারা বাদ যাবে নতুন মন্ত্রিসভা থেকে, তাই নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা।
জানা গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন সহিংসতা মোকাবেলা করে সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত সরকার গঠনের কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ। তাই নির্বাচনের চারদিনের মাথায় নতুন সরকারের শপথ ও মন্ত্রিসভা গঠন করছে দলটি।
এমতাবস্থায় জোর আলোচনা নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন প্রতিমন্ত্রী, বেশ কিছু সিনিয়র নেতা ও অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীদের পরাজয়ে নতুন ও তরুণদের দিকে ঝুঁকছে নতুন মন্ত্রিসভা বলে জানা গেছে।
দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, বিগত সরকারের মন্ত্রিসভার অনেরকেই থাকছেন না নতুন মন্ত্রিসভায়। শেখ হাসিনা যথারীতি আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিবেন। তবে সূত্রটি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা যেহেতু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারকে নেতৃত্ব দিবেন তাই তার পছন্দই আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে।
সূত্রটি জানায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিষয়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুর জ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নাম আবারও আসতে পারে নতুন মন্ত্রিসভায়। এদের কাজ সরকারি প্রসাশন, দল ও দেশের জনগণের ভেতর আওয়ামী লীগ সরকার সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এটি বিবেচনায় থাকবে বলেও জানায় সূত্রটি,তবে চট্টগ্রাম থেকে মন্ত্রী হিসাবে নতুন আলোচনা জনমুখে শুনাযাচ্ছে বন্দর-ডাবলমুডিং একালায় টানা তৃতীয়বার এমপি হওয়া এমএ লতিফ,চট্টগ্রাম রাউজান থেকে টানা চতুর্থ বার এমপি হওয়া ফজলে করিম চৌধুরী, ও পটিয়ায় থেকে এই প্রথমবার এমপি হওয়া প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরীর নাম। এই কথা যদি সত্যিই হয় তাহলে চট্টগ্রামবাসী নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় পাচঁজন মন্ত্রী পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।আর জাতীয় পার্টি থেকে একাধিক মন্ত্রী করেন সেক্ষেত্রে ব্যারিস্টার আনিছুল ইসলাম চৌধুরীর নামও যোগ হতে পাড়ে।
তবে এবারে নির্বাচনে নতুন মুখের জয়জয়কার। প্রায় ১০০ আসনে এই তরুণ ও নতুন সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। এটাও প্রভাব ফেলবে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে। এই হিসেবে এবার নতুন মন্ত্রিসভায় তরুণ ও অপেক্ষাকৃত কম বয়েসী মন্ত্রীদের দেখতে পাবে বাংলাদেশ।
এছাড়া মন্ত্রিসভার আলোচনায় আছে, জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, নির্বাচিত স্বতন্ত্ররা। আরো আলোচনায় আছেন, টেকনোক্র্যাট কোঠা। সবমিলিয়ে সূত্রটি জানিয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে তরুণদের চাহিদা ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সকল সংসদ সদস্য বা দলের ত্যাগী পরিচ্ছন্ন নেতা ভূমিকার রাখতে পারবেন তারাই এইবারের শেখ হাসিনার প্রথম পছন্দ।
Leave a Reply