নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম:
জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের দুর্নীতি-লুটপাট মুক্ত,আয় বৃদ্ধি নানা ইতিবাচক কার্যক্রমের সক্রিয়তা ও পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শীর্ষ সেবা প্রতিষ্ঠান। মানসম্মত সেবা রোগীবান্ধব সাধারণ মানুষের আস্থা বিশ্বস্ত সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সকলের পরিচিত। শিশু ও মাতৃসদন চিকিৎসা কেন্দ্রের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। শিশু ও মাতৃসদন হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা নির্ভর বিশস্ত আস্থায়। নগর ও চট্টগ্রামবাসীর নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সক্রিয়তায় হল দুর্নীতি লুটপাট মুক্ত।
আগে ছিল দুর্নীতিতে ডুবন্ত ও লুটপাটের আখড়ায় পরিনত। ছিল নানা অজুহাতে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতি। ছিল না কোন নিয়ম শৃঙ্খলা জবাবদিহিতা। নামে মাত্র দায়িত্ব পালনের আড়ালে দেদারসে চালাতো দুর্নীতি লুটপাট। তৎকালীন স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্বশীল সেবা দানকারী নিঃস্বার্থ মানবতাবাদী কার্যক্রমে নাম ভাঙ্গিয়ে চলাতো নিঃশব্দ নিবিড় অনিয়ম। জবাবদিহিতা না থাকায় এসব অনিয়ম ছিল না দেখার কেউ-ই। সেবাখেঁকো মুখোশধারী অনিয়মের দায়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ফাঁদে ডুবতে থাকা সেবা প্রতিষ্ঠান উদ্ধার হলো অবশেষে। যা ছিল দীর্ঘ ১৩বছর ধরে সুকৌশলে চলমান। সক্রিয় পদক্ষেপে দুর্নীতিমুক্ত করে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে আয় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রতি মাসে ৩৫-৫৫ লাখ টাকা আয় হলেও বর্তমান কমিটি দায়িত্বে আয় মাসে এখন ১কোটি ৮ লাখ টাকা আয় হয়েছে।দীর্ঘদিন ধরে আয়-ব্যয়ের অংকে ছিল ছিল পুকুর চুরি নয়,যেন সাগর চুরি। শুভংকরের ফাঁকি! আকাশ পাতাল ব্যবধানে ভুতুড়ে নামে খরচের বিল তৈরি। ভাঁওতাবাজি বেনামে লাগামহীন দুর্নীতি গরমিলের যেন শেষ নেই।
কুচক্রী মহলের শেষ পর্যন্ত লুকোচুরি ধামাচাপা দিয়েও শত অপচেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। সম্প্রতি ফাঁস হয় সেইসব অনিয়ম দুর্নীতি লুটপাটের বিবরণ। বিস্তারিত দুর্নীতি লুটপাটের আয়-ব্যায় লুটপাটের পরিসংখ্যান ও তথ্য বিবরণে সত্য প্রকাশিত ও উন্মোচন হয়।যা চট্টগ্রামবাসী'সহ সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া সমালোচনা ও গুঞ্জন উঠে।
যা প্রকাশিত হয় জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকায়। গণমাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া প্রিন্ট পত্রিকা উঠে এসেছে। সেবা প্রতিষ্ঠানের মানবসেবার আড়ালে লুটপাটের চিত্র।
অভিযুক্ত অনিয়মে জড়িতরা তদন্ত কমিটি ও উচ্চ তদন্তের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নিজেদের দুর্গন্ধে সুগন্ধি ছড়াতে কালো কয়লা কালো থাবা কে সাদা করার জন্য মরিয়া হয়ে সুনিপুন কৌশলে কাজ করছে। দিন রাত ঘুম হারাম করে চলেছে। নানা অজুহাতে এসব অপরাধীরা থেকে যায় আড়ালে।
বিগত অনিয়ম অভিযুক্তরা সুকৌশলে রাজনৈতিক ছত্রছায়া অপক্ষমতার অপব্যবহারে থেকে যায় ধরাছোঁয়া নাগালের বাহিরে। সেবা প্রতিষ্ঠানের অনিয়মকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ও প্রত্যাশা সাধারণ জনগণের। বৃহৎ জনস্বার্থে হাসপাতাল হোক রোগী চিকিৎসক বান্ধব। দায়িত্ববানরা হোক আরো দায়িত্বশীল। প্রতিটা মানুষের নিরাপদ চিকিৎসা হোক নিশ্চিত। চিকিৎসা সেবা হাসপাতালঙ্গন হোক শুভবুদ্ধি কল্যাণে মানবিক । সকলের প্রত্যাশা সাধারণের দাবি।
--------------------
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে জেমিসন হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালকে দুর্নীতিমুক্ত করে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে আয় বৃদ্ধি করা হয়েছে।বললেন অত্র প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুর্নীতিতে ডুবন্ত ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হওয়া জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালকে দুর্নীতিমুক্ত করে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে আয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এক সময় বছরে সাত কোটি টাকা আয় হলেও বিগত এক বছরে সেই আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০ শতাংশ। দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে ডুবতে থাকা জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান।
এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে আগে প্রতি মাসে ৫৫ লাখ টাকা আয় হলেও বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই আয় মাসে এখন ১ কোটি ৮ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়ার সময় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৮ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া ছিল। আগের কমিটির সেই ৮ মাসের বকেয়া থেকে ইতোমধ্যে নিয়মিত বেতন ভাতা প্রদানের পাশাপাশি বকেয়া ৬ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখন প্রভিডেন্ট ফান্ড সঠিকভাবে জমা হচ্ছে। যারা অবসরে যাচ্ছেন তাদের পাওনা যথাযথাভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে। তাছাড়া গাড়ি ব্যবহারের নামে অপচয় রোধ করে শুধু বিগত ২০২৩ সালে প্রায় ১৫ লাখের বেশি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে হাসপাতালটি শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত হওয়ায় আগামী বছর ১৫ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করি। এসব অসম্ভব কাজগুলো সম্ভব হয়েছে হাসপাতালের লুটপাট বন্ধ করে প্রতিটি বিভাগে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে পারায়। সনদ জালিয়াতি করে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ও অন্যান্য অনিয়মে যুক্ত ৮ জন কর্মচারীকে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চাকুরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসংঙ্গ: জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালটি চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি প্রতিষ্ঠান। জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে এই হাসপাতালের সবকিছু দেখাশোনা করেন। তবে ২০০৯ সাল থেকে গত ২ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালটির সবকিছু তদারকি করেন সোসাইটির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. শেখ শফিউল আজম। সোসাইটির নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয় গত ৩ জানুয়ারি। ওই দিন থেকে জেমিসন হাসপাতাল তদারকির দায়িত্বেও পরিবর্তন আসে।
রেড ক্রিসেন্ট কেন্দ্রীয় কমিটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত যা চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট এর কমিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালনার দায়িত্বে নিয়মিত কার্যক্রমে পরিচালিত হয়।