আব্দুল মজিদ মল্লিক,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর মহাদেবপুরে নার্গিস বেগম (৪৫) নামে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলা সদরের মডেল স্কুল মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে মহাদেবপুর থানা পুলিশ। পুলিশ জানান, ওই নারী বটি দিয়ে নিজের গলাকেটে আত্মহত্যা করেছেন। ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এর আগেও তিনি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
নিহতের স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, নাগির্স বেগম ছোটবেলা থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। মানসিক সমস্যার কারণে তাঁর বিয়ে হচ্ছিল না। দুই বছর আগে উপজেলা সদরের ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৪৭) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। এক মাস আগে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নার্গিসের স্বামী আনোয়ার হোসেন মারা যান। নার্গিস নিঃসন্তান ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি মায়ের সঙ্গে উপজেলা সদরের মডেল স্কুল মোড় এলাকার বাসায় থাকতেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মঙ্গলবার ভোরে তাঁর মা মেরিনা আক্তার ফজরের নামাজ শেষে নিজের ঘরে কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন। কুরআন তেলাওয়াত করতে করতে তিনি গোঙানির আওয়াজ শুনতে পান। গোঙানির শব্দ পেয়ে বাড়ির একটি বাথরুমে গিয়ে নার্গিসকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন মেরিনা আক্তার। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে নার্গিসকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাদেবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, নার্গিস নিজেই বটি দিয়ে নিজের গলাকেটে আত্মহত্যা করেছেন। যে বটি দিয়ে গলাকাটা হয়েছে সেটি মরদেহের পাশেই পাওয়া গেছে। তার মায়ের দাবি, বাড়িতে তারা মা-মেয়ে ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। বাড়িতে ঢোকার প্রধান দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। সকালে তার মা যখন কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন ওই সময় তিনি বাথরুম গোঙানির শব্দ পান। শব্দ পেয়ে সেখানে গিয়ে তিনি মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হবে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হবে। তদন্তে হত্যাকান্ড হিসেবে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আব্দুল মজিদ মল্লিক
নওগাঁ