মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে আব্দুস ছাত্তার নামে এক কৃষকের অনুমোদনকৃত সেচ পাম্পের ছারপত্র বাতিল করেছে বিএডিসি ও উপজেলা সেচ কমিটি।
ফলে চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেতে সেচ দিতে না পেরে ছাত্তারসহ এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষক চরম বিপাকে রয়েছেন।
কৃষক আব্দুস ছাত্তার উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।
জানা গেছে, আমনচুরি বিলে ওই সেচ পাম্প এলাকায় সেচ সুবিধার অভাবে প্রতিবছর অর্ধশতাধিক কৃষকের শতাধিক একর জমি অনাবাদী থাকে।
এসব অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষক আব্দুস ছাত্তারের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক কৃষক উপজেলা সেচ কমিটি বরাবর সেচ পাম্প স্থাপনের আবেদন করেন।
উক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএডিসি'র মাঠ পরিদর্শক ও সেচ কমিটি সরেজমিনে যাচাই-বাছাই ও অনুসন্ধান চালিয়ে আব্দুস ছাত্তারকে সেচ পাম্প স্থাপনের ছাড়পত্র দেয়া হয় ।
কৃষক আব্দুস ছাত্তার সেচ কমিটির ছাড়পত্র পেয়ে উল্লেক্ষিত স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন করেন। পরে তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বরাবরে আবেদন করেন।
ইতিমধ্যেই উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস ছাত্তারের ছাড়পত্রটি বাতিল করেন।
এতে আব্দুস ছাত্তারের সেচ পাম্প স্থাপনের চলমান কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে চলতি বোরো মৌসুমে আব্দুছ ছাত্তার সহ অর্ধশতাধিক কৃষক সেচের অভাবে পড়েন চরম বিপাকে। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতেই সেচের বিকল্প ব্যবস্থা করে শতাধিক একর জমিতে বোরো আবাদ করেন তারা। কিন্তু সেচ পাম্প স্থাপনের কাজ মাঝপথে এসে বন্ধ হওয়ায় কৃষকরা তাদের জমিতে সেচ দিতে পারছেন না।
এতে কৃষকদের জমি গুলো সেচের অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষকরা। কৃষক আব্দুস ছাত্তারের দাবি সেচ পাম্পের ছাড়পত্র পেয়ে নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে তার ।কৃষকদের কাছ থেকে ধারদেনা করে এ সেচ পাম্প স্থাপনের ব্যয়ভার মেটান কৃষক আব্দুস ছাত্তার।
কিন্তু উক্ত সেচ পাম্পের ছাড়পত্রটি উপজেলা সেচ কমিটি বাতিল করায় তিনি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আব্দুস ছাত্তারের অভিযোগ, তার সেচ পাম্পটি স্থাপনের ক্ষেত্রে পাশের সেচ পাম্প থেকে দূরত্বও সঠিক আছে। আইনগত ভাবে কোনো জটিলতা নেই তার সেচ পাম্প স্থাপনের ক্ষেত্রে। শুধু তাই নয় পাশের সেচ পাম্প দুইটির বিএডিসি'র ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে পরিচালনা করে আসছেন।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে উপজেলা সেচ কমিটি তার ছাড়পত্রটি বাতিল করেন।
আব্দুস ছাত্তার, তার সেচ পাম্পের ছাড়পত্র বাতিলের বিষয়টি নিয়ে ও এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুঁইয়া বলেন, আব্দুস ছাত্তার তথ্য গোপন করে আবেদন করেছেন। এ ছাড়া তার একজন প্রতিপক্ষ আছে। তাই সেখানে যে কোন সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারনে ছাড়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।