শেরপুর সংবাদদাতা।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে সুফল বাগান সৃজনের নামে বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগ স্থানীয় বাসীন্দাদের। এতে সুফল বাগান সৃজনে সরকারি উদ্যেশ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও গারো পাহাড়ের প্রানবৈচিত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষে ২০১৮সাল থেকে টেকসই বন জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের মাধ্যমে বাগান সৃজনের কাজ হাতে নেয় সরকার।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বন মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়নে শেরপুরের গারো পাহাড়ের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার তিনটি উপজেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকায় শতশত হেক্টর জমিতে সৃজন করা হয় দেশী প্রজাতীসহ ঔষুধী গাছের চারা।
বন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দের মাধ্যমে বাগানগুলোর কাজ সম্পূর্ন করা হয়।
কিন্তু বাগান সৃজনে নয়- ছয়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, দেশী প্রজাতির ও ঔষধী চারা রোপনে জৈবিক সার ব্যবহার, ঝুপঝাড় পরিস্কার, বাগান পরিচর্চা,বাগান পাহাড়াসহ বিভিন্ন স্তরে অর্থ বরাদ্দ দেয় সরকার।
কিন্তু চারা রোপনে সকল প্রকার নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। গান্দিগাঁও গ্রামের আলম মিয়া, মাইন উদ্দিন, গরুচরন দুধনই গ্রামের হাতেম আলী,ঝিনাইগাতী সদরের জিয়াউল হক জানান, হেক্টর প্রতি যে পরিমানের চারা রোপন করার কথা, সে পরিমানে চারা রোপন করা হয়নি। রাস্তার পাশে জনসম্মুখে কিছু চারা রোপন করে ভিতরে রাখা হয়েছে ফাঁকা।
অভিযোগ রয়েছে, প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো দেশি প্রজাতির চারা গাছ সংরক্ষণ করে সেখানে চারা রোপন দেখিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন করে সেখানে কোন চারা রোপন না করেই বাগান সৃজন দেখিয়ে সরকারি অর্থ হরিলুট করা হয়েছে ।
ফলে এসব বাগান গুলোতে সাইনবোর্ড থাকলেও বাস্তবে কোন চারা রোপন করা হয়নি। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে ছোট গজনী, গজনী, বাকাকুড়া, তাওয়াকুচা, রাংটিয়া, নওকুচি,গান্দিগাঁও, হালচাটি, ভেরভেরি, মালিটিলাসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক হেক্টর জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু সেখানে কোন বাগান নেই। আবার কোন কোন স্থানে চারা রোপন করা হলেও দেখভাল,
পরিচর্যাচাও
রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে তা আর আলোর মুখ দেখছে না বাগানগুলো।
জানা গেছে, মাঝে মধ্যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাগান পরিদর্শনে এলে যেখানে কিছু চারা রোপন করা হয়েছে সেখা নিয়ে দেখানো হচ্ছে ।
বাকি সব জায়গাগুলো তাদের দেখানো হয় না। এ ধরনের অভিযোগ করেছেন সুফল বাগানের সাথে জরিত অংশিদাররা।
পুরো পাহাড় এলাকায় সুফল বাগানের মধ্যে ফাঁকা পরে আছে। তবে মধু টিলা ও বালিজুরি রেঞ্জে সুফলের অবস্থা অনেকটাই ভাল হলেও রাংটিয়া রেঞ্জের অবস্থা খুবই করুন। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন ১ সেগুনবাগিচা একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উক্ত অভিযোগ তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় বনবিভাগকে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বন বিভাগের পক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বনবিভাগ। এ বিষয়ে জানতে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম খান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন এব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
Leave a Reply