নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের আত্মস্বীকৃত দূর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের অতিথি ম্যানেজিং কমিটির অভিভাববক সদস্যদের শুভেচ্ছা উপহার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
বিগত ১ ফেব্রুয়ারী-২০২৪ নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ অথিতিদের জন্য শুভেচ্ছা উপহারের ব্যবস্থা করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির ২ জন অভিভাববক সদস্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন না। এই ৩ জন অভিভাববক সদস্যের শুভেচ্ছা উপহার তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডল নিজের কাছে রেখে দেন। কিন্ত, ১০ মে-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত এ বিষয়ে এই ২জন অভিভাবক সদস্য কিছুই জানেন না।
অভিভাবক সদস্য বাঁশভিটা গ্রামের জয় গোপাল বলেন, উপহারতো উপহারই, সেটা এক টাকা হোক আর লাখ টাকা হোক, স্কুলের কোন উপহার আমি পায়নি এবং এ বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি। অথচ ১ ফেব্রুয়ারীর পরে অনেকবার পিওন/দপ্তরীরা আমার কাছে খাতা স্বাক্ষর করাতে এসেছেন।
অভিভাবক সদস্য হাটবাড়িয়া গ্রামের জয় প্রকাশ কুন্ডু অভিযোগ করে বলেন, আমি সারা দিন রূপগঞ্জ বাজারে থাকি আমার কাছে পিওন/দপ্তরীরা খাতা স্বাক্ষর করে নিয়ে যান, কিন্ত বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার শুভেচ্ছা উপহার আমি পাইনি এবং এ বিষয়ে শিক্ষক আলমগীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে পরে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডল অভিভাবক সদস্যদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে নোটিশ এবং রেজুলেশন খাতা সই করার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিভাবক সদস্যদের উপহার আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। তারা স্কুলে আসে নাই তাই দেইনি।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে এই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ শিক্ষক অনেকবার দূর্নীতি করে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ছাত্রদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করে স্কুলের মধ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন। অত্র বিদ্যালয়ের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রামের বোর্ড পরীক্ষায় কেন্দ্রে প্রবাসী ছাত্রের পরীক্ষা নিজে লেখে দেওয়ার সময় ধরা পড়ে পা জড়িয়ে ধরে নাকে খত দিয়ে নিজে পার পেলেও কেন্দ্রেটি বাতিল হয়ে যায়। ব্যবহারিক পরীক্ষায় ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা আদায়, অফিসের কথা বলে ব্লাকমেইল করে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ নানা ধরনের দুর্র্নীতির জন্য শেষ বারের মতো ক্ষমা চেয়ে আত্মস্বীকৃত দূর্নীতির মুচলেকা দেন। একাধিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির সত্যতা মিললেও অদৃশ্য শক্তির বলে বহালতবিয়তে থেকে করে যাচ্ছেন একের পর এক দূর্নীতি।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে স্কুল ছুটিকালীন সময়ে গোপনে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির বিদুৎসাহী নীলাশু শেখর (নিপু) সরকারকে দাতা সদস্য নেওয়া হয়েছে। যেটা বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারিরাও জানে না। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় দাতা সদস্য বাতিল করা হয়েছে।এ বিষয়টি জেলা প্রশাসন কতৃক তদন্তাধীন রয়েছে।