ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি :
হোস্টেলে সীট ও খাবার বাণিজ্যসহ শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য ডাঃ শাহ মোঃ মোখলেছুর রহমান হটাও,আইএইচ টি বাঁচাও’ দাবীতে জামালপুরের ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৯ মে) ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজির ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। বিক্ষোভ চলাকালে ৪থ, ৫ম এবং ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী কৌশিক, মেহেদী হাসান, আতিক কাওসার ও বৈশাখী আক্তারসহ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজির ডাঃ শাহ মোঃ মোখলেছুর রহমান, এই প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন হিসাবে যোগদান করার পর থেকে পাঠদানে অবহেলা, হোস্টেলে সীট ও খাবার বাণিজ্যসহ নানাভাবে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রেখেছেন। ক্লাসে ২-৩ ঘন্টা সময় নষ্ট করলেও ১০মিনিটের বেশী পাঠদান করেন না। ক্লাসে দুনিয়াবী কথা বলে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করেন। হোস্টেলের ছাত্রীদের নিয়ে দেহ ব্যবসাসহ নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নাম্বার কম, সাইলেন্ট এবসেন্ট, ফেল, ছাত্রত্ব বাতিল, হোস্টেলের সীট বাতিলের হুমকিসহ অভিভাবকদের ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানান মন্তব্য ও হয়রানী করা হয়।
এছাড়াও হোস্টেল সুপার রবিউল ইসলামের যোগশাজসে হোস্টেলের খাবার মিলে সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নিজের পছন্দ মত মিল ম্যানেজার র্নিধারণ করে মিলের টাকা আত্মসাত করেন ডা.মোখলেছুর রহমাম। শিক্ষার্থীর খাবার না খেলেও মাসিক খাবারের টাকা গুণতে হয়। শিক্ষার্থীদের ঠিকমত পাঠদান না করে হোস্টেলের টাকা কিভাবে মেরে নিম্নমানের খাবার দেওয়া যায় এই হিসাব নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তিনি। কলেজটিতে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয়া, বুয়া, বাবুর্চিদের বেতন থাকা সত্বেও প্রতিমাসে ১শত টাকা করে ৪০ হাজার টাকা উত্তেলন করা হয়।
ক্যাম্পাসে প্রিন্সিটাণ থাকলেও তিনিও নিজের অঘোষিত প্রিন্সিপাল হিসাবে মনে করে মনগড়াভাবে সরকারি ছুটি বাতিলসহ দিবস পালনে বাঁধা দিয়ে থাকেন। কলেজের জুনিয়রদের নিয়ে সিনিয়র ভাই ও আপুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথা বলে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করার পায়তারা করেন।
ডা. শাহ্ মো: মোখলেছুর রহমানের এহেন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থীরা গত দুইদিন ধরে আন্দোলনে ডাক দিয়ে কলেজের সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে কলেজের ক্যাম্পাস থেকে মোখলেছুর রহমানকে বহিস্কারের দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডা. শাহ্ মো: মোখলেছুর রহমানের সাথে মুঠোফেনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সে ফোন রিসিভ করেনি। বিক্ষোভ করার সময় দুজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসলামপুর থানা পুলিশ ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান করেন।
ডা.শাহ্ মো: মোখলেছুর রহমানের সাথে মুঠোফেনে কথা হলে তিনি উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন অসত্য, মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মজিবুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ইসুগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধান করা হবে আর শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপসারণের যে অভিযোগ ডিজি হেলথ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সেখানে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব মোঃ ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি মহোদয় আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোহন মিয়া। তারপর বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থামিয়ে প্রশাসনিক ভবনের তালা খোলে দিয়ে চলে যায়।