নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ,দূনীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।সেবা নিতে গেলে সেবাপ্রার্থীদের দিতে হচ্ছে ঘুষ আর ঘুষ না দিলে পদে পদে হতে হয় হয়রানির স্বীকার। ঘুষ ছাড়া নড়ে না ফাইল। ইতিমধ্যে নামজারির ৩৫৩ টি আবেদনের প্রতিবেদন দেওয়ার সময় পেরিয়ে গেছে। আরও ঝুলে আছে অসংখ্য প্রতিবেদন। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও নামজারি প্রতি ৫ হাজার টাকা দিলেই মেলে প্রতিবেদন। আর কাগজপত্রের কোন ঘাটতি থাকলে লাগে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। টাকার বিনিময়ে সিরিয়াল ভেঙ্গে পিছনের আবেদনের প্রতিবেদন দিচ্ছেন তিনি। আর ২০ হাজারের নিচেই মিলছে না কোন মিস কেসের প্রতিবেদন।
ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান গত ১ এপ্রিল নড়াইল পৌর ভূমি অফিসে যোগদান করেন। যোগদান করার পর থেকেই তার সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারন মানুষ। এখানে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে ঘুষ দেওয়ার পরও হয় না কাজ । নামজারি, মিস কেস, খাজনা প্রদানসহ অন্যান্য কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা। প্রকাশ্যেই ঘুষ-দুর্নীতির মহোৎসব চলছে নড়াইল পৌর ভূমি অফিসে।
এর আগেও তিনি ২০১৭ সালে নড়াইল পৌর ভূমি অফিসে কর্মরত থাকাকালিন দূনীতিতে ছিলেন শীর্ষে। ফলে নড়াইল পৌর ভূমি অফিস থেকে তাকে করা হয় বদলি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এই অফিসে ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের অনিয়মই নিয়ম। ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। তার চাহিদা মাফিক ঘুষ দিতে না পারলে কোন কাজ হয় না। এমনকি এ নিয়ে প্রতিবাদ করে ইতিমধ্যে অনেকে হচ্ছেন হয়রানির শিকার। আর এস রেকর্ডের চুড়ান্ত গেজেট হওয়ার পরেও হাবিবুর রহমানকে ঘুষ না দিলে দিচ্ছেন না খাজনা দেওয়ার হোল্ডিং নম্বর।এমনকি প্রতিবাদ করায় অনেকের এস এ রেকর্ডের তথ্য পৌর ভূমি অফিস থেকে গয়েব করে দিয়ে আর এস রেকর্ডকে ভূয়া বলে খাজন তো নিচ্ছেনই না বরং দেখাচ্ছেন মামলা করার ভয়-ভীতি।
এক ভুক্তভোগী জানান, সরকার ভূমি সেবাকে ডিজিটালাইজড করেছে। এতে ভূমি সেবা সহজ হয়েছে। অথচ বিষয়টিকে জটিল করে দিচ্ছেন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। নিজের জমির ভূমি উন্নয়ন কর নিজেই দেবো এ জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করি। পরে অনুমতির জন্য পৌর ভূমি অফিসে গেলে তারা জানান, আমার নামজারি খতিয়ানের পর্চায় অনেকগুলো নাম। এগুলো এন্ট্রি করতে হবে। এখন হবে না। পরে নিতে হবে। আমি ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করেই চলে আসি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূমি অফিসে নামজারি, খাজনা আদায়Ñসবকিছু অনলাইনভিত্তিক হলেও জমির পর্চা (খসড়া) তোলাসহ সব কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিকভাবে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে নড়াইল পৌর ভূমি অফিসে। নিরীহ ভুক্তভোগীরা বলছেন, এই ভূমি কর্মকর্তার দুর্নীতি রোধে দুদকের হস্তক্ষেপ জরুরি।
জেলা শহরের চিহ্নিত ভূমি দস্যুদের সাথে রয়েছে তার গভীর সখ্যতা। নিয়মিত যাতায়াত করেন ভূমি দস্যুদের ডেরায় । ভূমি দস্যুরা পৌর ভূমি অফিসে গেলে সাধারন মানুষদেরকে তিনি (হাবিবুর) চিনেন না, ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভূমি দস্যুদের খেদমতে।
অভিযোগের বিষয়ে ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ কে দিয়েছে। আমার পাশে এখন নড়াইলের এক সিনিয়র নেতা বসে আছেন তার সাথে কথা বলেন।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকার বলেন,আমি একমাস এসেছি, এ বিষয়ে কেউ আমাকে অভিযোগ দেয়নি অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।
Leave a Reply