ইমন মিয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমার বাড়ি ফেরা ঈদের আগের। মনটা খুব বাড়ি যেতে চাইছে। পড়ালেখার তাগিদে বগুড়াতে থাকি। আমাদের সাঘাটা থানা বেশি দূরে নয়। শহর থেকে ৪৩ কিলোমিটার হবে। ট্রেনে যাইতে ৫৫ টাকা ট্রেন থেকে নামে ভ্যানে নেই ২৫ টাকা ভাড়া। মাসের শেষ দিক বলে হাতে টাকা পয়সা নেই বললেই চলে, তার মাঝে রমজান মাস মেসে বেশি টাকা দেওয়া লাগছে খাবারের জন্য। পড়ার টেবিলের ড্রয়ার ঘেটে দেখি ২৩ টাকা পেলাম। তাই দিয়ে রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যাওয়া যাবে। বন্ধুদের কাছে হাত পাতাতে খারাপ লাগে৷ বাড়ি যাওয়ার হবে না মনে হয়। বাড়িতে ফোন করলাম। মায়ের কন্ঠটা ভেসে এলো। বাবা ভালো আছিস। আমি বললাম তোমার মতো মায়ের দোয়া থাকলে কি খারাপ থাকতে পারি। মা একটা মুচকি হাসি দিল। আবার বলল ঈদের তো কয়দিন বাকি। বাড়ি আসবি না। কোনো দিন টাকা না থাকলে মা কে বলি না যে মা টাকা নেই টাকা দাও। কিন্তু আজ কেন জানি আর থাকতে পারলাম না। বললাম ভাড়া টাকা নেই। আসবো না মনে হয়। মা বলল আমার কাছে ও টাকা নাইরে বাবা। মায়ের উপরে একটু অভিমান হলো। পরে চিন্তা করলাম মার কাছে বুঝি টাকা নাই। মা টাকা কোথায় থেকে দিবে। কিছুক্ষণ পর আমার নগদ একাউন্টে ২০০ টাকার একটা মেসেজ আসলো। একটু পরে মা ফোন করলো এবং বলল বাবা তোমার জন্য ২০০ টাকা নগদে পাঠিয়ে দিচ্ছি। পাইছো কি টাকা। আমি বললাম জি মা টাকা আসছে। মা সাথে সাথেই বললো বাড়ি চলে আসো। আনন্দে আমার দু চোখে পানি এসে গেলো ধরে রাখতে আর পাইলাম না৷ নিশ্চয়ই কারো থেকে ধার নিয়েছে। এটা ভাবতে ভাবতে বার হয়ে বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে চলে আসলাম, আসে শুনি ট্রেনের খবর হয়ছে। একটু বসে থাকতেই চলে আসলো ট্রেন। কষ্ট করে ট্রেনে উঠলাম অনেক লোকের ভিড়ে কোন মতে একটা সিট পেলাম বসার জন্য। মায়ের টানে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম।