মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো, স্টাফ রিপোর্টার।
শেরপুরে চোরাকারবারী ও ডাকাত দলের সর্দার নুরুল ইসলাম খোকন বিডিআর কর্তৃক ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন চেয়ারম্যানের সহোদরভাই নুর হোসেন।
৮জুন শনিবার চেয়ারম্যান আকবর আলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বে নুরুল ইসলাম খোকন বিডিআর পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা ও আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হয়রানি, সামাজিক সম্মানহানী, অর্থনৈতিকভাবে ব্যবসায়িক ক্ষতি সহ প্রাণনাশের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি বার বার আইনের আশ্রয় নিয়ে বিচার চেয়ে আসছি। কিন্তু মামলার দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগে ও আইনের ফাঁক ফোকরে বের হয়েই সে ও সহযোগীরা বারবার আমাদের ক্ষতির চেষ্টা করছে।
তিনি আরো বলেন নুরুল ইসলাম খোকন বিডিআর বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের একজন উৎশৃঙ্খল সাবেক সিপাহী। তার উৎশৃঙ্খল ও অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য বিডিআর থেকে চাকুরিচ্যুত হয়ে গড়ে তুলেছেন চোরাচালান চক্র ও ডাকাত দল। তার চক্রের কয়েক জন সদস্য নানা সময়ে বিজিবি থেকে চাকুরিচ্যুত হয়েছে।গুরুত্বপূর্ন সীমান্ত এলাকায় চাকুরি করার সুবাদে সীমান্তের অরক্ষিত ও দুর্বল এলাকা গুলো ব্যবহার করে বর্তমানে সে পাথর-কয়লার ব্যবসার আড়ালে গড়ে তুলেছে মাদক সহ অবৈধ পন্যের ব্যবসা। তার রয়েছে একাধিক পাসপোর্ট। সে সকালে ভারতে থাকে বিকেলে বাংলাদেশে থাকে। এমনকি ভারত থেকে আসা গরুর চালান সীমান্ত এলাকা থেকে এনে গ্রামের বাড়িতে গরু খামার পর্যন্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, খোকন বিডিআর বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর থেকে কাপড় বোঝাই ট্রাক থেকে কোটি টাকার চালান ছিনতাই করে। সেই মামলায় সে সহ তার চক্রের বেশ কয়েকজন জেল খাটেন। ভারতীয় চোরাকারবারীর অংশ হিসেবে সে নেত্রকোনা জেলায় ভারতীয় কাপড়, গাড়ির টায়ার সহ পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল খাটেন।এছাড়াও শেরপুরের বহুল আলোচিত ৩৫ লক্ষ টাকা ছিনতাই মামলার সে প্রধান আসামি।
আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে সে ছুরিকাঘাত করে। আমার উপর ট্রাক উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তার দলের সাঙ্গপাঙ্গদের সর্বোচ্চ ২৬টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা বাংলাদেশে অপকর্ম করেই ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করে। তার সাথে গ্রেফতারকৃতরা এখনো কয়েকজন ভারতে আছে এবং বাকিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় বসবাস করেছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন বর্তমানে খোকন বিডিআর চোরাকারবারির টাকায় সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। বিভিন্ন ভিআইপির সাথে কৌশলে দেখা করে। তাদের সাথে তুলা ছবি ফেসবুকে দিয়ে আর সেই ছবি দেখিয়ে মানুষকে ভয় ভীতি দেখায়। যাদের মধ্যে স্বরাষ্টমন্ত্রী, ডিআইজি, সাবেক সচিব, সাবেক হুইপ, বর্তমান এমপি সহ আরও ভিআইপি রয়েছে। তার অবৈধ টাকার প্রভাবে বিশিষ্টজনের সাথে ছবি ব্যবহার করে নিজেকে ডন প্রমান করে বিভিন্ন সময় এলাকার কিছু উৎশৃঙ্খল ছেলে-পেলেদের নিয়ে মহড়া দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়।
বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা তার হুমকিতে প্রাণ ভয়ে আছি। তার ভয়ে আমরা আদলত চত্ত্বরে গিয়ে ঠিক মতো মামলা পরিচালনা করতে পারছিনা। তারা আদালতেও লোকজনের উপর প্রকাশ্যে চড়াও হয়ে গালাগালি সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসকল কাজে তাদের সহযোগীতা করে শহরে বসবাসকৃত তার চক্রে সদস্য। যাদের অধিকাংশই হত্যা মামলার আসামি।
আপনাদের মাধ্যমে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার চাওয়া, এই চোরাকারবারী ও ডাকাত সর্দার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের আইনের আওতায় আনেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে মো. নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, তার সাথে আমার ব্যবসায়িক বিভিন্ন ব্যাপারে ঝামেলা চলছে। সে আমার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছে। আমি এর কোনটির সাথে জড়িত নই। এছাড়াও যমুনা সেতু থেকে ছিনতাই হওয়ার ট্রাকের ড্রাইভারকে ফুঁসলিয়ে আমার নাম ব্যবহার করে মামলা করিয়েছে। নেত্রকোনার কমলাকান্দায় ভারতীয় কাপড় সহ আটকের ব্যাপারে তিনি বলেন, আকবর আলী চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় পুলিশ অফিসারদের সাথে বাবা-ছেলের সম্পর্ক তৈরি করে। পরবর্তীতে তাদেরকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়েছে।