নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এমনটি বলেছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
সংবাদ সম্মেলনে মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল চেয়ে মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে আন্দোলন করছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। প্রধানমন্ত্রীর হুমকির পরপরই তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। এতে আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
যারা জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেছে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশে চলমান এ আন্দোলন নিয়ে আপনি কী বলবেন?’
এর জবাবে মিলার বলেন, ‘আমরা ঢাকার ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কে অবগত এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের দিকে নজর রাখছি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যে কোনো সমৃদ্ধ গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশ। আমরা যে কোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতার নিন্দা জানাই। এ সহিংসতায় যারা ভুক্তভোগী তাদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। ফলে সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল হয়ে যায়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাত জন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে। গত ১১ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন না। এরপর থেকেই এই আন্দোলন নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।