সুমন ইসলাম ,ঠাকুরগাঁও:
বেকারি পণ্যের নামে আসলে আমরা কি খাচ্ছি ? ঠাকুরগাঁওয়ের বেশিরভাগ বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণেও রয়েছে চরম অব্যস্থাপনা।
এছাড়াও পণ্য রাখার ঘর যেমন অপরিষ্কার। পোকামাকড়েও ভরপুর। সর্বোপরি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নেই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স। থাকলে মান বজায় রেখে উৎপাদন করা হচ্ছে না। অনুমোদন ছাড়াই বেকারি পণ্যের উৎপাদন এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে উঠেছে। ফলে মানব স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন হুমকির মুখে পড়ছে।
বুধবার সরেজমিনে বেশ কিছু বেকারি ঘুরে দেখা যায় , বেকারি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছে না।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মুসলিম নগর এলাকার ‘ডেইলি ফ্রেশ বেকারী’ এর কারখানা ঘুরে বেকারিটিতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে চরম অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা যায়। একইসঙ্গে খাদ্য সংরক্ষণের কক্ষ অপরিষ্কার পাওয়া যায়।তৎখনাত বেকারি পরিচালক মো: সোহান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি ,পরবর্তিতে মুঠোফোনে কল করেন তিনি এ বিষয়ে কিছু না বললেও; পুনরায় বেকারীতে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
এছারাও ,সালান্দর,ডেনিস ও গড়েয়া এলাকায় কয়েকটি বেকারিতে দেখা যায় ,প্রসেস করা খাবারে কোন লেবেলিং পাওয়া যাচ্ছে না।বেকারি পণ্য চরম নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতসহ কর্মচারীদের কোন স্বাস্থ্য সনদ নেই।
এছাড়া বেকারি পণ্য উৎপাদনে যে রং ব্যবহার করা হচ্ছে তাও ফুড গ্রেড নয়। ভেজাল পণ্য দিয়ে খাদ্য পস্তুত করা হচ্ছে বেকারিতে। পিওর ফুড উৎপাদনে যে মান বজায় রেখে বেকারি পণ্য তৈরি বিধান রয়েছে তার ধারের কাছেও নেই কারখানাওয়ালারা। পণ্যের মান সংরক্ষণে নেই কোন ব্যবস্থা। উৎপাদনের তারিখ লেখা থাকলেও মেয়াদ নেই অনেক বেকারি পণ্যের গায়ে। বারবার এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং পরিবেশে ও যেসব দ্রব্য দিয়ে বেকারি পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ।
এমন পরিবেশে উৎপাদিত হচ্ছে বেকারি পণ্য। যা সকালে ঠাকুরগাঁওসহ আসপাশের জেলার মানুষ নাস্তার জন্য ব্যবহার করে। এছাড়াও রাত-দিন গরমে ঘামে চুপসানো অবস্থায় খালি গায়ে বেকারি শ্রমিকরা আটা-ময়দা-দলিত মথিত করে। সেখানেই তৈরি হয় ব্রেড, বিস্কুট, কেক,লাচ্ছসহ নানা লোভনীয় খাদ্য। উৎপাদন ব্যয় কমাতে এসব বেকারির খাদ্যপণ্যে ভেজাল আটা, ময়দা, ডালডা, তেল, নিম্নমানের বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেন বলেন,এসব বিষয়ে আমাদের অভিজান অব্যাহত রয়েছে এছারাও সামনের দিনগুলোতে অভিজান বৃদ্ধি করা হবে ।
Leave a Reply