জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁ
জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনার ৯ বছর পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৭৪ জন নেতাকর্মীর নামে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে।
গতকাল রোববার (১ লা সেপ্টেম্বর) দুপুরে নওগাঁর ১ নং আমলী আদালতে এ মামলা করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে এজহার নথিভুক্ত করতে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমতিয়াজুল ইসলাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নওগাঁ পৌরসভার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, ককটেল ও হাত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলাটি করেন নওগাঁ পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও নওগাঁ সদর (নওগাঁ-৫) আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন জলিল, নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ, নওগাঁ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৭৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ লাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মজনু, রাজন, শরিফুল ইসলাম, সাগর ও খুরশিদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডিএম আতা ও ইলিয়াস তুহিন প্রমুখ।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে নওগাঁ পৌরসভার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হামলার ঘটনা ঘটে। খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরদার, নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন জলিল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর, নির্বাচনের ফলাফল সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ছিনতাই, জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে ককটেল ও হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় সন্ত্রাসীরা।
মামলার বাদী বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, হামলার ঘটনার পর দিন নওগাঁ সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করেন। মামলা করিলে হত্যা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এজন্য এতোদিন মামলা করতে পারিনি। সেদিনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বাদীর আইনজীবী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার সময় হামলার ঘটনায় দ-বিধির ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/১১৪ ও ৩৪ ধারায় এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এজহার হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply