মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো, স্টাফ রিপোর্টার।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ডেফলাই বেদে পল্লী সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, গত প্রায় দুইযুগ পূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধশতাধিক বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পানবর ও গুরুচরনদুধনই গ্রামে এসে বস্তি স্থাপন করে বসবাস শুরু করে।
এখানে বসবাসরত অবস্থায় বেদে সম্প্রদায়ের তরুণ ও যুব সমাজ মদ গাজা হিরোইন ব্যবসা ও সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হয়।
এ কারনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সাথে মতবিরোধের কারণে এখানে টিকতে না পেরে তারা দুধনই ও পানবর গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন। জানা গেছে ২০১৪ সালের দিকে তারা উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ডেফলাই গ্রামে এসে বস্তি স্থাপন করে বসবাস শুরু করেন।
এ গ্রামে অর্ধশতাধিক পরিবারের তিন শতাধিক লোকের বসবাস। স্থানীয়রা জানান এখানেও এসে বেদে সম্প্রদায়ের তরুণ ও যুবসমাজ তারা অনেকেই মাদক ব্যবসা, সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা, কেরাম বোর্ডের নামে জুয়ার আসরসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জরিয়ে পরে।
এ বেদে পল্লীর পাশেই রয়েছে খ্রিষ্ঠান পল্লী। এ পল্লীর লোকজন নিজেদের খাওয়ার জন্য মদ তৈরি করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ বেদেপল্লীর তরুন ও যুবকরা খ্রিষ্ঠান পল্লী থেকে মদ খেয়ে রাস্তা ঘাটে ও বেদে পল্লীতে মাঝে মধ্যেই চালায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। অনেক সময় এসব বিষয় নিয়ে সংঘর্ষ ও সংঘাতে রূপ নেয়। এসব সংঘর্ষে দা-লাঠিসুটাসহ চলে গোলায়ের ব্যবহার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রশিদুজ্জামান বলেন এরা মানেন না দেশের প্রচলিত আইন কানুন। এ বেদে পল্লীতে রয়েছে স্বঘোষিত দুইজন সরদার। মাসুদ ও বাঘা সরদারের নেতৃত্বে চলে এসব কর্মকান্ড। এ অভিযোগ স্থানীয়বাসিন্দাদের।
বেদে পল্লীর এসব বিষয় নিয়ে বেদে পল্লীর কেউ মুখ খুলেন না। আবার কেউ মুখ খুললে তার উপর নেমে আসে সন্ত্রাসীদের কালো থাবা। এসব অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কাল হয়ে দাঁড়ায় পল্লীর জামাল মিয়ার পরিবার।
সম্প্রতি জামাল মিয়ার পরিবারের সাথে নুরু মিয়ার পরিবারের দন্দ বাঁধে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা জানান জামাল মিয়া ও নুরু মিয়ার পরিবারের মধ্যের ঝামেলাটি তিনি মিমাংসা করে দেন । কিন্তু নুরু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার না মেনে স্বঘোষিত সরদার মাসুদ ও বাঘার মদদে নুরু মিয়ার পরিবারের লোকজন জামাল মিয়ার বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন।
নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান বলেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় এনে নুরু মিয়ার পরিবারকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু নুরু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা জরিমানার অর্থ দেয়ার জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দেন।
পরে জামাল মিয়াকে টাকা না দিয়ে তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। নুরু মিয়ার লোকজন জামাল মিয়ার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে ভয়-ভীতি ও প্রাননাশের হুমকি প্রদর্শন করে আসছে।
ফলে জামাল মিয়ার পরিবারের সদস্যরা নুরু মিয়ার পরিবারের সদস্যদের হাতে জিম্মি হয়ে পরেছে। বর্তমানে জামাল মিয়ার পরিবারের সদস্যবা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন।
রাস্তাঘাটে যাতায়াত করতে পারছেন না। সন্ত্রাসীদের ভয়-ভীতি ও হুমকির মুখে জামাল মিয়ার পরিবারের সদস্যরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ।
নুরু মিয়ার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। বাঘা ও মাসুদ সরদার বলেন পল্লীর কেউ আমাদের কথা মানেন না। তারা বলেন যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় আপনারা তাদের আইনের হাতে তুলে দেন।