জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমা চাওয়াসহ বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। নয়তো ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকাল ৫ টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। এসময় তারা মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, ছাত্র-জনতার মুক্তির লড়াই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান। অসংখ্য প্ৰাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাওয়া সবার মুক্তির প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহরা চব্বিশ বিপ্লবের নায়ক, তাদের অবাঞ্ছিত করার এখতিয়ার জাতীয় পার্টির নেই।
জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা প্রসঙ্গে সারজিস-হাসনাতের ক্ষোভ
মশাল মিছিল করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে রংপুরে জাতীয় পার্টির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।
এ সময় ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত ইসলাম বলেন, জাতীয় পার্টি ছিল খুনি হাসিনার সহযোগী সংগঠন.. খুনি হাসিনার প্রত্যেকটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সহযোগিতা করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কবর রচনা করেছিলেন.. অবিলম্বে জাতীয় পার্টির বক্তব্যকে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।
এর আগে সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে রংপুরে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।’
ফেসবুকে সারজিস ও হাসনাতের লেখার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ করছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
গত ৭ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
পোস্টে সারজিস আলম লিখেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?’
হাসনাত লিখেছিলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’।