নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মোল্যার বদলির জেরে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস অবরুদ্ধের অভিযোগ উঠেছে।
ভূয়া সমন্বয়ক পরিচয় দানকারী
আসিব আহমেদ উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে এবং সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নড়াইল শহরের মহিষখোলা এলাকার জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সামনে মাইজপাড়া ইউনিয়নের আসিব আহমেদ,আনিসুর জামান সোহাগ,মেহেদী হাসানসহ অনেকে জটলাবেধে দাড়িয়ে আছে।তারা নিজেদেরকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করেন।
তারা জানান, উপপরিচালক সেলিম ভূইয়ার বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি (আয়া) অর্পনা রানী দত্তের অভিযোগের ব্যবস্থা নিতে এসেছেন।এ সময় উপপরিচালক সেলিম ভূইয়া মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনে ছিলেন বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মোল্যা ও আয়া অর্পনা রানী দত্ত দীর্ঘ এক যুগ (১২ বছর) যাবৎ একই কর্মস্থলে ছিলেন। গত কয়েকমাস আগে আয়া অর্পনা রানী দত্তকে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বদলি করা হয় এবং গত ৯ অক্টোবর উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মোল্যাকে সদর উপজেলার ভদ্রবিলা মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বদলির আদেশ হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানায়, আলাউদ্দিন মোল্যা ও অর্পনা রানী দত্ত দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় তাদের দুই জনের বিষয়ে নানা ধরনের বাজে কথা ভেসে বেড়াত। অর্পনা রানী দত্ত আয়া হলেও আলাউদ্দিন মোল্যা তাকে কোন কাজ করতে দিতেন না। ব্যাক্তিগত টাকা দিয়ে মাসিক ৫শ টাকা ভিত্তিতে বহিরাগত লোক দিয়ে কাজ করাতেন। এখানে প্রসূতি মায়েদের নরমাল ডেলিভারী,নিয়মিত চেকআপসহ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে পরিবার কল্যান পরিদর্শিকারা আয়া অর্পনা রানী দত্তের কোন ধরনের সহযোগিতা পেতেন না। এমনকি আলাউদ্দিন মোল্যার প্রশ্রয়ে আয়া অর্পনা রানী দত্ত সঠিক দায়িত্ব পালন না করে পরিবার কল্যান পরিদর্শিকদের সাথে খারাপ ব্যবহারও করতেন।ফলে এখানে কোন পরিবার কল্যান পরিদর্শিকারা বেশিদিন থাকতে পারতেন না।
এ বিষয়ে আয়া অর্পনা রানী দত্ত বলেন,উপপরিচালক স্যারের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করেছি, আমি অসুস্থ আমাকে স্যার যদি আমার আমার বাড়ির কাছে কোথাও বদলি করে আনত তাহলে আমার কোন অভিযোগ থাকত না। কোন কোন অফিসে অভিযোগ করেছেন জানতে চাইলে বলেন,এ বিষয় আমি জানি না আলাউদ্দিন ভাই সবকিছু করে দিয়েছে।
মোঃ আলাউদ্দিন মোল্যা আয়া অর্পনা রানী দত্তের অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। ছেলে আসিব আহমেদসহ অন্যান্যরা সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে উপপরিচালকের কার্যালয়ে যাওয়ার বিষয়ে বলেন,এটা তাদের বিষয় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে গিয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপপরিচালক আমাকে যেভাবে বদলি করছেন এটা তার এখতিয়ারের বাইরে, তিনি আমাকে বদলি করতে পারেন না।
রাতে ফোনে ভূয়া সমন্বয়ক আসিব আহমেদ বলেন,জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে আমি অন্যান্যদের সাথে গিয়েছিলাম।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি চলে আসি এবং আমি গ্রামের বাড়ি মাইজপাড়ায় থেকে আন্দোলন করেছি,সমন্বয়ক ছিলাম না।আন্দোলনে ঢাকায় অংশগ্রহন না করে গ্রামে কেন আসলেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
উপপরিচালক সেলিম ভূইয়া বলেন, ভদ্রবিলা মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি মডেল কেন্দ্র নরমাল ডেলিভারীতে এ কেন্দ্রটি জেলার মধ্যে অন্যতম।এখানে দীর্ঘদিন উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের পদটি শূণ্য রয়েছে এবং মডেল কেন্দ্রটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন মোল্যাকে বিধিসম্মতভাবেই এখানে বদলি করা হয়েছে। আজকে দুপুরের দিকে আমি মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনে ছিলাম এ সময় অফিস থেকে জানাল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লোকজন আসছে। আমি এসে তাদেরকে পাইনি।