ওবায়দুর রহমান, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি।
মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুটি পদে কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লিখিত পরীক্ষার দুই বছর পর হতে যাওয়া এ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সেই সময়ের চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, দুই বছর আগে ওই নিয়োগের জন্য যে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে কোন ছাপা প্রশ্ন ছিল না। চাকরি প্রার্থীদের দাবি,অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়া পরীক্ষার মাধ্যমে ওই সময়ের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর মাগুরা জজশীপের বিভিন্ন সহকারী জজ আদালতে নাজির ও হিসাব রক্ষক পদে তিন জন করে মোট ছয়জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৯ অক্টোবর লিখিত ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। যেখানে ৬ পদের জন্য ৪২ জন চাকরি প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মৌখিক পরীক্ষার জন্য আসতে বলা হয়েছে।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে মানববন্ধন করেন একদল চাকরি প্রার্থী। তাঁদের কয়েকজন ওই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের একজন মাগুরা সদর উপজেলার দক্ষিণ মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা শামীম হোসেন নামে এক যুবক জানান, ২০২২ সালের অক্টোবরে মাগুরা আদর্শ ডিগ্রী কলেজে ওই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁদেরকে কোন ছাপা প্রশ্ন দেওয়া হয়নি। পরীক্ষার হলে দুজন কর্মকর্তা মুখে প্রশ্ন বলেন চাকরি প্রার্থীরা সে প্রশ্ন খাতায় লিখে নেন। শামীম হোসেন বলেন, ‘অনেকবার চাকরি পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু কখনও এমন দেখিনি প্রশ্ন মুখে বলে দেয়। দুই বছর পর হঠাৎ ওই পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। আমরা শুনেছি অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে’।
নাজির পদে ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মাগুরা সদর উপজেলার বেঙ্গা বেরইল গ্রামের বাসিন্দা আল আমীন জানান, তাঁদের প্রশ্ন বোর্ডে লিখে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকেই ভালো পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তাঁদের কেউ লিখিত পরীক্ষায় টেকেনি। আমরা শুনতে পেয়েছি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিগত সরকার দলীয় অনেকের এখানে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা অস্বচ্ছ এই নিয়োগ বাতিল চাই’।
এ বিষয়ে জানতে নিয়োগ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেন নি।
Leave a Reply