লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
লালমনিরহাট সদরের রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট এলাকার বাসিন্দা মৃত ফরমান আলীর ছেলে মো: আনারুল ইসলাম আঙ্গুর এসিআই মটরস লিমিটেড রংপুর অফিস থেকে ২৮/০৫/২০১৬ ইং তারিখে সোনালীকা D145RX(A) মডেলের একটি ট্রাক্টর কিস্তিতে ক্রয় করেন। ট্রাক্টরটির নির্ধারিত মূল্যে ছিল ১১,৫০,০০০ টাকা। সে অনুযায়ী ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ হয়ে রংপুর এসিআই মটরস হতে ট্রাক্টরটি কিনে নেন তিনি।এবং নিয়ম মেনে ১০,১০,৫০০ টা বিভিন্ন সময়ে কিস্তির টাকাও পরিশোধ করেন।
দীর্ঘ আশা ছিল ট্রাক্টরটি কিনে চাষাবাদ করে জীবনের ভাগ্য বদলের , কিন্তু তার সেই আশায় গুড়ে বালি হয়ে গেছে। আর্থিক অসুবিধার কারণে বাকী কিস্তির টাকা পরিশোধে বিলম্বিত হওয়ায় ১৬/১১/২০১৫ইং তারিখে রংপুর-কাউনিয়া মহাসড়ক হতে ট্রাক্টরটি আটকিয়ে রংপুর ধাপ অফিসে নিয়ে আসেন এসিআই মটরস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সেই সচল ক্রয়কৃত ট্রাক্টরটি পরবর্তীতে শর্তমোতাবেক বিলম্ব ফি-সহ বাকী পাওনা টাকা প্রদানে মো: আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে চাইলে এসিআই মটরস লিমিটেড ট্রাক্টরটি ফেরত দিতে অস্বীকার জানালে তিনি ১২/০৬/২০১৬, ২০/১২/২০১৬ ও ১৭/১০/২০১৭ইং তারিখে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে চান কিন্তু এসিআই মটরস লিমিটেড ট্রাক্টরটি ফেরত না দেয়ায় পরবর্তীতে আনারুল ইসলাম আঙ্গুর নিজেই বাদী হয়ে এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিসের কর্মকর্তা মোঃআতিয়ার রহমান, রিজিওনাল সেলস্ অফিসার, মো: বাবুল হোসেন, রফিকুল ইসলামকে আসামী করে ৪০৬, ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে বিগত ০৫/০৭/২০১৮ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-২০৩/১৯। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আসামীগণের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন এবং আসামীগণ
জামিনপ্রাপ্ত হয়ে মামলা দীর্ঘায়িত করে দীর্ঘ বৎসর মামলা পরিচালনা করান। বিজ্ঞ আদালত গত ১৬/০৫/২০২৪ইং তারিখে মামলার বাদীকে ২,৭০,০০০ টাকা গ্রহণ সাপেক্ষে ট্রাক্টরটি ফেরত প্রদানের জন্য আদেশ প্রদান করেন। সে আদেশ অনুযায়ী আনারুল ইসলাম আংগুর বাকী টাকা প্রদান করতে ইচ্ছুক হন এবং এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিস হতে ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে গিয়ে দেখতে পায় যে, এসিআই মটরস-এর লোকজন ইতিমধ্যে উক্ত ট্রাক্টরের মূল টায়ার বদল করে পুরাতন অচল টায়ার লাগিয়ে রেখেছে। ট্রাক্টরের হাল যন্ত্র, ব্যাটারী এবং মূল্যবান যন্ত্রাংশ গুলো খুলে নিয়েছে। অর্থাৎ ট্রাক্টর নামের খোলসটি শুধু পড়ে রয়েছে বর্তমানে যা পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে।
দোকানে ভাংড়ি হিসাবে বিক্রয় করা হলে আনুমানিক মূল্য সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা হতে পারে বলে জানান ভুক্তভোগী।
এক মাত্র সম্বল টুকু হারিয়ে অসহায় কৃষক আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি সাবেক অবস্থায় উদ্ধারে বার বার ব্যর্থ হয়ে রংপুরের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯৮ অনুযায়ী গত ১৯/০৫/২০২৪ইং তারিখে
মামলা দায়ের করেন, মামলার নম্বর মিছ পিটিশন ৮৬/২৪ইং এবং বর্তমানে কোতয়ালী থানায় তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। কিস্তিতে ট্রাক্টর কিনে প্রতারণার স্বীকার হয়ে বছরের পর বছর হয়রানী ও আর্থিক ক্ষতির শিকার কৃষক পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। বারবার বিচার চেয়েও কোন সঠিক বিচার মিলেনি । পরিশ্রমের টাকায় ক্রয় কৃত ট্রাক্টরটি সচল অবস্থায় ফিরে পাবে বলে আশায় রয়েছে অসহায় কৃষক আনারুল ইসলাম আঙ্গুর।
এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিসের কর্মকর্তগণের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অজুহাত দেখিয়ে বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তে বিষয়টি সুরাহা হবে নতুবা বাকি ২,৭৫,০০০ টাকা দিয়ে বর্তমান যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে বলেন বর্তমান যার বাজার মূল্য ১ লক্ষ টাকার নিচে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি কিনে রংপুর এসিআই মোটরস এর ফাঁদে পড়ে এর পিছনে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন এবং তিনি কোন সুবিচার পাচ্ছেন না।
Leave a Reply