আব্দুল মজিদ মল্লিক, নিজস্ব প্রতিবেদক নওগাঁ:
উত্তরের জেলা নওগাঁয় গত দুই দিনের তুলনায় সোমবার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। তবে শীতল বাতাস তীব্রতা ও ঘন কুয়াশার দাপট কমেনি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সকালে বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার এ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি। সেই হিসাবে তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি। তবে ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে তেমন তাপ অনুভূত হচ্ছে না।
সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৭টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে ১৫-২০ মিটার দূর থেকে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। সড়কে গাড়িগুলো ধীর গতিতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে। রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে জটলা করে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শ্রমজীবী মানুষ।
তাজের মোড় এলাকার রিকশাচালক নুরুল হক বলেন, ‘সকালের এই ঠান্ডায় রিকশা চালানো যায় না। হাতে-পায়ে ব্যথা লাগে। আবার কুয়াশার জন্য যাত্রীরাও কম বের হয়েছে।’
জেলা সদরের নিকটস্থ এলাকা ফতেপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় মাঠের ফসল আর্দ্রতায় ভিজে রয়েছে। কৃষক শামসুল আলম বলেন, ‘টানা শীত কুয়াশা শুরু হয়েছে। এই কুয়াশায় ফসল ভালো থাকছে না। আবার কাজ করতে গেলে হাত-পা জমে যায়।’
মাস্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাপমাত্রা একটু বেড়েছে শুনেছি, কিন্তু আমরা তেমন কোনো পার্থক্য বুঝতে পারছি না। কুয়াশায় চারপাশ ঝাপসা থাকে। কাজে যেতে গিয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডা লাগছে।’
বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে রোববার তাপমাত্রা রেকর্ড ছিল ১০ দশমিক ৬ এবং শনিবার ছিল ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দুই দিনের তুলনায় আজ তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে।’
এ দিকে শীতের এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘বর্তমানে শীত ও কুয়াশার প্রকোপ বেড়েছে। আমরা ইতিমধ্যে শীতার্ত মানুষের সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।
Leave a Reply