মোঃ জুলহাস উদ্দিন হিরো, স্টাফ রিপোর্টার।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাতা তাড়ানী এলাকার গারো পাহাড়ে বেড়াতে এসে উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে বয়ে আসা খরস্রোতা ভোগাই নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে গিয়ে মামাতো ফুফাতো দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো- এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী মিহান (১৯) ও সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া সাজিত (১৩)। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাহাড়ঘেঁষা ভোগাই নদীর লক্ষীডোবায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের সাথে বেড়াতে আসা স্বজনরা জানান, সাজিত ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌর শহরের স্কুল শিক্ষক আহাম্মদ আলীর ছেলে মিহান ও ময়মনসিংহ সদরের উপসহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হুমায়ন কবীরের ছেলে সাজিতসহ ১৮ জন মিলে পারিবারিকভাবে নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ের অপুর্ব সৌন্দর্যে ভরপুর পানিহাতা তাড়ানী এলাকার গারো পাহাড়ে বেড়াতে আসে। শনিবার দুপুরে পাহাড়ের গা ঘেঁষা নদী ভোগাইয়ের লক্ষীডোবার কাছাকাছি মামাতো ফুফাতো ওই দুই ভাই গোসল করতে নামে। এসময় তারা নদীর বালুচরে হাঁটতে গিয়ে অসাবধানতা বশত পা পিছলে প্রথমে সাজিত নদীর গভীরে তলিয়ে যেতে থাকে। এসময় তাকে বাঁচাতে মিহান এগিয়ে গেলে জড়াজড়ি করে দুই ভাই গভীরে তলিয়ে যায়। সাথে আসা তাদের চাচা সোহরাব ভাগ্নে ও ভাতিজাকে বাঁচাতে নদীতে ঝাপ দিলেও তিনি নদীতে থাকা পাথরে আঘাত পেয়ে পড়ে যান। ততক্ষণে দুই ভাই নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর পাঠানো হলে বিকেল পৌনে চারটার দিকে নদীর তলদেশ থেকে দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহতের স্বজনেরা জানান, একটি বিয়ে উপলক্ষ্যে আত্মীয়-স্বজন সবাই পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায় সমবেত হন। শুক্রবার বিয়ে শেষে শনিবার নারী ও শিশুসহ মোট ১৮ জন মিলে গারো পাহাড়ের পানিহাতা তাড়ানী এলাকার পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে সেখানে বেড়াতে আসে। এদিকে, বেড়াতে এসে দুই ভাইয়ের সলিল সমাধির ঘটনায় স্বজন ছাড়াও ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার সিদ্দিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে দ্রুত জামালপুর থেকে নালিতাবাড়ী সীমান্তের পাহাড়ি নদী ভোগাইয়ে আসি। ডুবুরি নামানোর পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওই দুই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন বলেন, নিহত ওই পর্যটকদের মরদেহ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের অনুমতি চেয়ে আবেদন প্রাপ্তির পর তাদের স্বজনের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় নালিতাবাড়ী থানায় অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
Leave a Reply