মোহাম্মদ মাসুদ
বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নেজাম উদ্দিনকে হেনস্তা মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
৭ জানুয়ারী (মঙ্গলবার) বিকালে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন সভাপতি (কামরুল হাসান তালুকদার) ও সাধারণ সম্পাদক (মনিরুল হক ডাবলু) এর লিখিত সাক্ষরিত বিবৃতির মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রকাশ করেন।
লিখিত বিবৃতিতে সভাপতি এবং সেক্রেটারি বলেন,আমরা সকল নাগরিককে আহ্বান জানাচ্ছি, আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে যে কোনো অসন্তোষ বা অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনানুগ পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এ ধরনের ঘটনা সরকারি কর্মচারীদের মনোবল ও কর্মস্পৃহা নষ্ট করে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নেজাম উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি। একজন পুলিশ অফিসারকে এভাবে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত ও মারধর করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া দন্ডনীয় এবং ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য।
আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা প্রতিরোধে সরকার ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে বাংলাদেশ পুলিশ আরও কার্যকর ও জনবান্ধব হয়ে উঠতে পারে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়,গত ০৬ জানুয়ারী, দুপুর আড়াই টায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নেজাম উদ্দিন কে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে তার সন্তানকে আনতে যান। ঐ সময় চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সামনে চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম শহীদ সহ স্থানীয় কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে গিয়ে তার সন্তানের সামনে তাকে (সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নেজাম উদ্দিন) মারধর করেন। উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে ভাইরাল হয়।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নেজাম উদ্দিনের শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে ছিড়ে ফেলা এবং চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি মারার ঘটনায় রাজনৈতিক মহল ও সর্বস্তরের জনগণের মাঝে নানা গুঞ্জন ও তীব্র আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। যা কিনা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মনেও গভীর সমবেদনা তৈরী হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের চকবাজার থানা সদস্যসচিব শহিদুল ইসলামকে দল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন,আমি তাকে ছাত্র জনতা গণপিটুনি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি মাত্র। যা মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। আইন ও দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আমার সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর (সাধারণ সম্পাদক) বেলায়েত হোসেন বুলু বলেন,প্রশাসনের লোকের প্রতি এমন বেআইনি কাজের তীব্র নিন্দা ও সমবেদনা জানান। অভিযুক্ত ঐ নেতাকে এবং সংশ্লিষ্টদের দল থেকে সামরিক প্রত্যাহার সহ দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে । প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থায় যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান। আইনি প্রশাসনিক লোকের প্রতি এমন আচরণ কোনটি কাম্য নয়।
Leave a Reply