সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি :
রাজশাহীর তানোরে তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) লালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্জুন কুমার দাসের দায়িত্ব অবহেলায় তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী এক শিশু শিক্ষার্থীর পা ভেঙে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আগামিকাল তার পায়ে অস্ত্রপাচার করা হবে। গত ২ ফেব্রুয়ারী রোববার সকালে বিদ্যালয় চত্ত্বরে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আহত শিক্ষার্থীর নাম মুরসালিন (১২) সে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও লালপুর গ্রামের উজ্জ্বল রহমানের পুত্র। এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী সচেতন মহলের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন,প্রধান শিক্ষকে অপসারণ করা না হলে তারা তাদের সন্তানদের এই স্কুলে আর লেখাপড়া করাবেন না।
স্থানীয়রা জানান,আগামি ৫ ফেব্রুয়ারী তালন্দ ইউপির নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হবে। আর এজন্য অনুশিলনের নামে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করে প্রধান শিক্ষক অর্জন কুমার। বিদ্যালয় চত্ত্বরে আয়োজিত অনুশিলনে অংশগ্রহণ করতে ছেলে-মেয়ে সকল শিক্ষার্থীকে বাধ্য করা হয়।
এদিন প্রধান শিক্ষক অর্জুন জোরপূর্বক ছেলেদের হাই জাম্প খেলায় অংশগ্রহণ করান। মুরসালিন জাম্প দেবার জন্য দৌড়ে শুরু করে।কিন্ত্ত শেষ মুহুর্তে প্রধান শিক্ষক হাত উচুঁ করে তাকে জাম্প দিতে নিষেধ করে, এসময় শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে মুরসালিন শক্ত মাটিতে পড়ে গেলে তার পা ভেঙে যায়।কিন্ত্ত তার চিকিৎসা না করিয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে হাটাহাটি করায় এক পর্যায়ে পা-ফুলে রক্তাক্ত হয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তানোর উপজেলা হাসপাতাল ও পরে রাজশাহীর একটি
বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের ভুলে পা ভেঙে মুরসালিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও প্রধান শিক্ষক অর্জুন কুমারের কোনো অনুশোচনা বা সহযোগীতা নাই, এমনকি তার খোঁজ খবর নেয়া প্রয়োজন মনে করেনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক অর্জুন কুমার বলেন,ছাত্রের পা ভাঙলে তার করার কি আছে,ভাগ্যর ওপর কারো হাত নাই, তিনি বলেন, চিকিৎসা করালে পা ভালো হয়ে যাবে, এটা নিয়ে খবর করার কি আছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা খেলা-ধুলার আয়োজন করতে বলেছেন তাই তিনি আয়োজন করেছেন। দায় তো শিক্ষা কর্মকর্তাও এড়াতে পারেনি।
এবিষয়ে মুরসালিনের পিতা উজ্জ্বল রহমান বলেন,খেলাধুলা করতে গিয়ে তার সন্তানের পা ভেঙেছে,অথচ প্রধান শিক্ষক একটি বার খোঁজখবর নিতে আসেনি।তিনি প্রধান শিক্ষকের অপসারন চান।
এবিষয়ে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা বেগম বলেন, বিষয়টি তার জানা নাই।তিনি বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply