শেরপুরের নকলায় গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে আহত ৫ জনের মধ্যে আমির হোসেন(৩০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকালে তার মৃত্যু হয় । এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দ্বারালো ২ এ। আমির হোসেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে। এর আগে রবিবার রাতে একই গ্রামের মৃত নইম উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (৪৫) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে শেরপুরের নকলা পৌরসভার দক্ষিণ (মাউড়া) এলাকায় ঢাকা-শেরপুর আঞ্চলিক বাইপাস মহসড়কের পাশে গরুচোর সন্দেহে গনপিটুনির এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনিতে ৬ জন গুরুতরভাবে আহত হয়। আহতরা হলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া গ্রামের মৃত নইম উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (৪৫),
নুর মোহাম্মদের ছেলে আমির হোসেন (৩০), মো,জয়নাল আবেদীনের ছেলে আজি রহমান (১৯), মো,সুরুজ মিয়ার ছেলে রাজু মিয়া (১৭), আবুল হোসেনের ছেলে আয়নাল হক (৩৫) ও সন্ধ্যাকুড়া গ্রামের শাহজাদার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয়বাসীন্দারা জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যানে করে ওই ৬ জন ঘটনাস্থলে নেমে রহস্যজনকভাবে ঘুরাফেরা করছিল। এসময় গ্রামবাসিরা গরুচোর সন্দেহে তাদের গনপিটুনি দেয়। এতে আহত হয় ৬জন। খবর পেয়ে নকলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যু হয়। ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকালে আমির হোসেনের মৃত্যু হয়। জানা গেছে, পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়না তদন্তের পর তার পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। অপরদিকে অবস্থার অবনতি হলে রাজু ও আয়নাল নামে ২ জনকে ঢাকা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের অবস্থা ও আশংকাজনক। এদিকে নিহতও আহতদের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইগাতী উপজেলার গোমড়া গ্রামে চলছে শোকের মাতন। উল্লেখ্য,গরুচোর সন্দেহে গ্রামবাসীরা তাদের গণপিটুনি দিলেও তারা মুলত গরুচোর নয়। অনুসন্ধানে গিয়ে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, রবিবার রাতে ওই ৬ জন একটি পিকআপ ভ্যানে করে গোমড়া গ্রাম থেকে ভারতীয় মদকের চালান ময়মনসিংহের ফুলপুরে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে ওই স্থানে এসে আশ্রয় নেয়। তবে নিহত ও আহতদের দাবি ওই ৬জন শ্রমিকের কাজ করতে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে পথে এ ঘটনা ঘটে। নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তারা ৬ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মোসলেম উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন সোমবার বিকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমির হোসেনের মৃত্যু হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply