লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটে বাইসাইকেল চোরকে ছাড়াতে দুই বিএনপি নেতার তদবির করার অভিযোগ উঠেছে। সে ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে এক সাংবাদিক ও কয়েকজন এলাকাবাসীকে লাঞ্ছিত করে বিএনপির ওই নেতা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেরটার দিকে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড পশ্চিম হাতুরা (মান্নানের চৌপতি) এলাকায় সক্রিয় এক চোরকে বাইসাইকেল চুরি করার সময় হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, চোরকে আটকানোর ঠিক ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় দুই যুবক তারা নিজেদের মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বিএনপি নেতা দাবি করে চোরকে ছাড়তে বলেন। পরে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকেও আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত হয় স্হানীয় সাংবাদিক সাধন রায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর ওই দুজন বিএনপি নেতা চোরকে ছাড়তে পুলিশকে চাপ দেয়। সে ঘটনার ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিক সাধন রায়ের মোবাইল কেড়ে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় বিএনপির ওই দুই নেতা। পরে এলাকাবাসী ওই দুজনের পরিচয় সনাক্ত করার পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
নিজেদের বিএনপি নেতা পরিচয় দেওয়া দুই যুবকের বাড়ি মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বুড়ির বাজার এলাকায়। তারা হলেন, সোবহান আলীর ছেলে আশরাফুল আলম ওরফে গাচ্ছা আশরাফুল (৪০)। আলতাফ পাটোয়ারীর ছেলে সোহাগ পাটোয়ারী (৩০)। আশরাফুল নিজেকে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি ও সোহাগ নিজেকে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি পরিচয় দেন।
ঘটনাস্থলে আসা পুলিশের এস আই জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুজন যুবকের সাথে স্থানীয় লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমরা উপস্থিত হওয়ার পর পরিবেশ শান্ত হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বলেন, এখানে উপস্থিত লোকজনের ধারনা চোরের সাথে ওই দুই যুবকের যোগসাজস রয়েছে। কেননা চোর আটকের প্রায় ৫ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিজেদের বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে চোরকে ছেড়ে দিতে বলেন। সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে গালিগালাজ করে এই দুজন যুবক।
সাংবাদিক সাধন রায় বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখার সাবেক প্রচার সম্পাদক ও দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার লালমনিরহাট প্রতিনিধি। সাধন রায় বলেন, চোর আটকের সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও ধারণ করার সময় দুজন যুবক ভিডিও ধারনের বাধা দিয়ে আমার মোবাইল কেড়ে নেয় এবং আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তারা নিজেদের মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা বলে দাবী করেন।
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি এস আর শরিফুল ইসলাম রতন বলেন, সাংবাদিককে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাঁধা, লাঞ্ছিত ও হুমকি প্রদান করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরনবী জানান, সাংবাদিকের কাজে বাধা ও লাঞ্চিত করা খুবই দুঃখজনক। অপরাধীরা যে দলেরই হোক অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply